শান্তি নিকেতনের অধ্যক্ষ ও রবীন্দ্রনাথের সহচর শৈলজারঞ্জন মজুমদারের জন্মভিটা নেত্রকোনায় নির্মিত দৃষ্টিনন্দন “শৈলজারঞ্জন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র” টি জনবল নিয়োগ জটিলতায় উদ্বোধন হচ্ছে না। কারুকার্যমণ্ডিত নান্দনিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি গত জুন মাসে সম্পন্ন হলেও রক্ষণাবেক্ষণে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে ঠিকাদারদের। দেয়াল টপকে ভেতরে যাওয়া আসা করে বখাটেরা।
সংস্কৃতিকর্মীসহ স্থানীয়দের দাবি সঠিক নিয়মে স্বজনপ্রীতি ছাড়া দায়িত্বশীল জনবল নিয়োগ হলে সাধারণ মানুষের উপকারে যেমন আসবে তেমনি এই কেন্দ্রের অপব্যবহার হবে না। যদিও কেন্দ্রটিতে যাওয়ার সড়ক ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ। সরু গ্রামীণ সড়ক জরাজীর্ন।
জানা গেছে, একজন বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ, রবীন্দ্র সংগীত প্রশিক্ষক, রবীন্দ্র সংগীতের স্বরলিপিকার এবং বিশ্বভারতীর রসায়ন বিজ্ঞানের শিক্ষক শৈলজারঞ্জন মজুমদার জেলার মোহনগঞ্জ বাহাম গ্রামে রমণীকিশোর ও সরলাসুন্দরী মজুমদার দম্পতির ঘরে জন্ম নিয়েছিলেন।
বিশিষ্ট এই সঙ্গিতজ্ঞের স্মৃতি রক্ষায় সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে গণপূর্ত বিভাগের তত্বাবধায়নে শৈলজা রঞ্জনের জন্মভিটা বাহাম গ্রামে ৩৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২ দশমিক ৩২ একর অধিগ্রহনকৃত জমিতে তিনতলা বিশিষ্ট এ প্রকল্প। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি এর উদ্বোধন করেন। চলতি বছরের জুন মাসে এর কাজ শেষ হয়েছে।
এতে থিয়েটার, কনফারেন্স হলরুম, গ্রন্থাগার, যাদুঘর, নিপুন কারুকার্য মণ্ডিত সীমানা দেয়াল, একাডেমি চত্বরে পুকুর সম্বলিত আধুনিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র রয়েছে। রয়েছে একটি খোলা মঞ্চও। যেখানে শুধুমাত্র রবীন্দ্র চর্চাই নয় সমগ্র সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চায় অনন্য ভূমিকা রাখবে। কিন্তু ৪ থেকে ৫ বছরে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অনেকে চিন্তিত। স্থানীয়দের দাবি সঠিক নিয়মে স্বজনপ্রীতি ছাড়া সুশিক্ষত জনবল নিয়োগ করা।
ঠিকাদার মুখলেছুর রহমান বলেন, জুন মাস থেকে ১০ জন করে লোক নিয়োগ করে দেখভাল করছি। এতে মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা গচ্চা যাচ্ছে। সম্পূর্ণ কাজ করে দিয়েও আমরা আটকা পড়েছি।
মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি জানান, ইতিমধ্যেই এটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। অচিরেই এটি উন্মুক্ত হবে। একটি বড় উৎসব করে এটির উদ্বোধন হবে। এটি হাওর অঞ্চলসহ জেলাবাসী এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহের মানুষের কাছে সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণার কেন্দ্র হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল