ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৬ দিন ধরে পানি সরবরাহ নেই। এর ফলে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালের রোগীসহ চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হাসপাতালে পানি ওঠানোর একমাত্র পাম্পটি গত ৬ দিন ধরে বিকল। মঙ্গলবার সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের পুরুষ-মহিলা ওয়ার্ড এর ট্যাপ থেকে পানি পড়ছে না। রোগী ও তাদের স্বজনরা বাইরে থেকে পুকুর ও টিউবওয়েলের পানি আনতে ব্যস্ত। পানিসংকটে শৌচাগারে পানি ব্যবহার কম হওয়ায় চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের সুজাপুর গ্রামের রোগী আকলিমা বেগম (২৮) বলেন, আমাদের পানি না হলে এক মিনিটও চলে না। পানির অভাবে শৌচাগারে যেতেও ইচ্ছে করেনা, খুব কষ্ট হচ্ছে। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত শনিবার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি হন চরচান্দিয়া ইউনিয়নের নদী ভাঙন এলাকার আকবর হোসেন (৩৭)। তিনি বলেন, এখানে চিকিৎসার জন্য আসার পর থেকে টয়লেটের ট্যাপে পানি নেই। পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় অনেক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. উৎপল দাস জানান, গত ৬ দিন ধরে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানি নেই। পানির পাম্প নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। সেটা কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার দুইবার আসছে কিন্তু পাম্প ঠিক হয়নি। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি আজকালের মধ্যে পানির সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
উপজেলার যত স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান আছে সব প্রতিষ্ঠানের পানি, বিদ্যুৎ, দরজা-জানালা, বাথরুম, টাইলসসহ সব ধরনের মেরামত এর কাজ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের। এই দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তদের বারবার বললেও তারা কথা শোনে না এবং গুরুত্ব দেন না। সোনাগাজী হাসপাতালে বারবার তাদের কারণে অনেক সমস্যা হচ্ছে। এই দপ্তরকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনা উচিত।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, হাসপাতালের পানির সমস্যার বিষয়টি আমি জানতাম না। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে কথা বলে পানির সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন বলেন, পানির সমস্যা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ
