হাঁটু সমান বড় বড় গর্ত। ছয় কিলোমিটারে আছে শতাধিক গর্ত। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ১২ গ্রামের মানুষ। গর্তের সামনে এলে যাত্রী নামিয়ে বাহন গুলো হেলেদুলে পার হয়। এমন অবস্থা চলছে ৬ বছর ধরে। শীতে ধুলাবালি আর বর্ষায় কাদায় আটকে দুর্ভোগে পড়েন হাজারও মানুষ।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক লাগোয়া কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার শহীদনগর-জুরানপুর সড়কে এমন অবস্থা বিরাজ করছে। সড়কটি উপজেলার সুন্দলপুর মডেল ইউনিয়ন ও বারপাড়া ইউনিয়নে অবস্থিত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ৬ কিলোমিটার এ রাস্তাটিতে রয়েছে শতাধিক গর্ত। প্রায় সময় দেবে যাচ্ছে ট্রাক ও সিএনজি অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনের চাকা। অর্ধযুগ ধরে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির এমন বেহাল অবস্থা চলতে থাকলেও নেয়া হয়নি কার্যকরী পদক্ষেপ। এ সড়কটির আশপাশে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাজার। তার মধ্যে রয়েছে জুরানপুর আদর্শ কলেজ, করিমুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়, জায়গীর কামিল মাদরাসা ও সুন্দলপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন যাতায়াত করেন ভাগলপুর, ষোলপাড়া, সাতপাড়া, দশপাড়া, সুন্দলপুর, গয়েশপুর, জায়গীর, সুখীপুর, রাঙ্গাশিমুলিয়া, হামির্দ্দী, চখমখোলা, চরগোয়ালী, বড়গোয়ালী ও মুদাফরদী এলাকার মানুষ।
সড়কের সবচেয়ে নাজুক অবস্থা শহীদনগর, ভাগলপুর, ষোলপাড়া, দশপাড়া, সুন্দলপুর বাজার, শিবপুর ও মুদাফরদী এলাকার অংশে।
ভুক্তভোগী স্থানীয় মাহবুবুল হক জানান, বর্ষায় তাদের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। সামান্য বৃষ্টিতেই অনেক সময় গর্তে ফেঁসে যায় বড় বড় ট্রাক ও বিভিন্ন যাত্রীবাহী যানবাহন। হাঁটতে গিয়ে গর্তে পড়ে যান অনেকে।
স্থানীয় এক শিক্ষক জানান, বৃষ্টির দিনে এ রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় আতঙ্কে থাকেন। কারণ অনেক সময় রিকশায় থাকলেও কাদা ছিটকে কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য আমাদের অনেক শিক্ষক অতিরিক্ত কাপড় নিয়ে প্রতিষ্ঠানে আসেন।
দশপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মীর মো. সোহেল রানা ও সুন্দলপুরের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটির বেহাল অবস্থা অর্ধযুগ অতিক্রম করলেও প্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের যেন কোনো দায়বদ্ধতা নেই।
১ নং সুন্দলপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসলাম মিয়াজী বলেন, রাস্তাটির এমন চিত্র সত্যিই দুঃখজনক। এ কারণে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছে।
১৬ নং বারপাড়া ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম (মানিক সওদাগর) বলেন, তিনি নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনিও চান রাস্তাটি সংস্কার হোক। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।
দাউদকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী আফসার উদ্দিন খন্দকার বলেন, দাউদকান্দি উপজেলার শহীদনগর-জুরানপুর সড়কের টেন্ডার হয়ে গেছে। আশা করছি নির্বাচনের পরে কাজ শুরু হয়ে যাবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত