ফরিদপুরে একটি ভাড়া বাসা থেকে রিনা বেগম (৩০) নামের এক নারীর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় তার পাঁচ বছর বয়সী শিশুকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। সপ্তাহখানেক আগে মুনিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের রঘুনন্দনপুরের হাবিব ভিলার তিনতলা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, রিনা বেগম ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের মান্নান ব্যাপারীর মেয়ে। তাঁর স্বামী ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের শহীদ মোল্যা সৌদি আরবে থাকেন। তাঁদের পাঁচ বছরের একটি কন্যা সন্তান ও আট বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। যদিও রিনার এক স্বজন জানিয়েছেন, রিনা ও শহীদের ছয় মাস আগে বিচ্ছেদ হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই ঘরের ভেতর থেকে পানি বেয়ে বাইরে চলে আসে। বিষয়টি সন্দেহজনক হলে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় জানান। পরে পুলিশের একাধিক দল এসে দরজা ভেঙে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘চলতি মাসে মনিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ওই নারীকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসাটি ভাড়া নেন। মাত্র এক সপ্তাহ আগে ওই নারী উঠেছিলেন। ঘটনাটি জানার পর মনিরুলকে ফোন দিয়ে ঘটনাটি জানালে তিনি আর আসেননি। পরে তাঁর মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।’
রিনা বেগমের বাবার বাড়ির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৫ বছর আগে ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের শহীদ মোল্যার সঙ্গে বিয়ে হয় রিনার। বিয়ের দুই বছর পর শহীদ মোল্যা সৌদি আরবে পাড়ি জমান। একপর্যায়ে রিনাকেও নিয়ে যান। কয়েক বছর আগে রিনা দেশে চলে আসেন। এর মধ্যে এক বছর আগে ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের দয়ারামপুরের মনিরুল ইসলামের (৪০) সঙ্গে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান রিনা। এ নিয়ে স্বামী শহীদ মোল্যার সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়। পরে তিনি শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কাজ শুরু করেন।
রিনার চাচা আব্দুস সালাম ব্যাপারী বলেন, ‘ছয় মাস আগে শহীদের সঙ্গে রিনার বিচ্ছেদ হয়। এরপর মনিরুলকে বিয়ে করে। যদিও আব্দুস সালামের এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, শহীদ ও রিনার মধ্যে বিচ্ছেদ হয়নি।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ভেতর থেকে বন্ধ একটি বাসা থেকে বিবস্ত্র অবস্থায় এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পুলিশের তদন্তকাজ চলছে। সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ