আর্মেনিয়ার সীমান্তবর্তী গ্রাম ‘খনাৎসাখ’-এ রাত নামলেই দুশ্চিন্তা ছড়িয়ে পড়েন বাসিন্দারা। স্থানীয়রা জানান, প্রতি রাত ১০টার পর আজারবাইজানের সেনারা সীমান্তের ওপার থেকে গুলি ছুড়ছে। যদিও এখনো কেউ হতাহত হয়নি, তবে গ্রামের বাড়িগুলোতে গুলি লাগছে প্রায়ই।
আজারবাইজান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, বরং আর্মেনিয়াই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে। এই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই সীমান্তে ফের যুদ্ধের সম্ভাবনা জেগে উঠেছে।
গ্রামবাসী কারো আন্দ্রানিয়ান বলেন, ‘ঘরে শিশু আর বৃদ্ধ মানুষ আছে, গুলির শব্দে রাত কাটে আতঙ্কে।’
১৯৯০-এর দশক থেকেই দুই দেশের মধ্যে ১,০০০ কিলোমিটার সীমান্ত বন্ধ। এর মধ্যেই দুটি বড় যুদ্ধ হয়ে গেছে। এখন সীমান্তে আবার উত্তেজনা বাড়ছে, যা চলমান শান্তি আলোচনার বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চলতি বছরের মার্চে দুই দেশ একটি শান্তিচুক্তির খসড়া নিয়ে সম্মত হয়েছিল। এটা ২০২৬ সালে স্বাক্ষরের কথা। কিন্তু এরপর থেকেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আজারবাইজান এখন কৌশলগত সুবিধায় আছে এবং সীমিত সংঘর্ষের মাধ্যমে আর্মেনিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে।
আজারবাইজান চায়, আর্মেনিয়া তাদের ‘সিউনিক প্রদেশ’ দিয়ে এক করিডোর তৈরি করুক, যাতে তারা মূল আজারবাইজান থেকে বিচ্ছিন্ন ‘নাখচিভান’ অঞ্চলে সহজে যাতায়াত করতে পারে। কিন্তু আর্মেনিয়া বলছে, এতে তাদের ইরান সীমান্ত বিপন্ন হবে।
সিউনিক আর্মেনিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রদেশ। এখান দিয়েই ইরানের সঙ্গে তাদের সংযোগ, যা তাদের বাণিজ্যিক জীবনের মূল ভরসা। স্থানীয় এক নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, ‘যদি আর্মেনিয়া ইরান সীমান্ত হারায়, তবে সেটা হবে বড় বিপর্যয়।’
যদিও আর্মেনিয়ার সরকার বলছে, নতুন করে কোনো যুদ্ধ হবে না, তবুও সীমান্তের মানুষ প্রতিদিন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল