ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে বড়সড় সুরক্ষা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা, ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিএসিএ)।
২০২৪-২৫ সালের বার্ষিক নিরীক্ষায় ডিএসিএ মোট ৫১টি সুরক্ষা-সংক্রান্ত ত্রুটি খুঁজে পেয়েছে শুধুমাত্র এয়ার ইন্ডিয়ার অপারেশনে। এর মধ্যে সাতটি লঙ্ঘন 'লেভেল ১' শ্রেণির। অর্থাৎ, সেগুলি বিমান সুরক্ষাকে গুরুতরভাবে বিপন্ন করতে পারে।
এই নিরীক্ষার ফলাফল জুন মাসে আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং ৭৮৭ দুর্ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয় বলে জানালেও, ওই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ২৬০ জনের মৃত্যু এবং তদন্ত ঘিরে যে চাপে সংস্থাটি রয়েছে, তাতে এই রিপোর্ট আরও উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
ডিএসিএ জানিয়েছে, বার্ষিক নিরীক্ষার অংশ হিসেবে মোট আটটি বাণিজ্যিক বিমান সংস্থার ২৬৩টি সুরক্ষা লঙ্ঘন চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার পরে সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘন ধরা পড়েছে অ্যালায়েন্স এয়ার (৫৭), ঘোড়াওয়াট স্টার (৪১), এবং কুইক জেট (৩৫)-এর ক্ষেত্রে। ইন্ডিগো ও স্পাইসজেটের বিরুদ্ধেও যথাক্রমে ২৩ এবং ১৪টি লঙ্ঘনের উল্লেখ রয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে বলা হয়েছে, তারা নিরীক্ষার সময় পুরোপুরি স্বচ্ছতা বজায় রেখেছে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ডিএসিএ-কে তাদের জবাব পাঠাবে ও সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
একটি সরকারি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলটদের প্রশিক্ষণে ঘাটতি, অনুমোদনহীন ফ্লাইট সিমুলেটরের ব্যবহার এবং দায়িত্ব ভাগাভাগিতে গাফিলতি স্পষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে বোয়িং ৭৮৭ এবং ৭৭৭ বিমানের কিছু পাইলটদের "আবশ্যিক মনিটরিং" যথাযথভাবে করা হয়নি।
ডিএসিএ প্রধান ফয়েজ আহমেদ কিদওয়াই এক বিবৃতিতে বলেছেন, এ ধরনের ত্রুটি নিয়ে তাদের কড়া মনোভাব রয়েছে, তবে সংস্থাগুলির মধ্যে ক্রমবর্ধমান ‘সেল্ফ রিপোর্টিং’ সংস্কৃতি দৃষ্টান্তমূলক। তাঁর কথায়, “লঙ্ঘন মেনে নেওয়া যায় না, কিন্তু অন্তত এখন সংস্থাগুলি নিজেরাই তথ্য দিতে শুরু করেছে। এটি একটি ইতিবাচক দিক।”
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল