ভোলার ভোলা পৌরসভার এক কলেজছাত্রী (২৩) লঞ্চ থেকে পড়ে মেঘনা নদীতে নিখোঁজ হওয়ার চার দিন পর তার লাশ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। ঘটনার পর পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে, তিনি আত্মহত্যা করার মেয়ে নন, এ মৃত্যু রহস্যজনক। সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন তারা।
১৭ জুন সকালে ভোলা থেকে ঢাকাগামী কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ থেকে নদীতে পড়ে যান ছাত্রীটি। ২০ জুন লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীরহাট এলাকায় তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। মৃত্যুরহস্য ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছে—তিনি নিজে ঝাঁপ দিয়েছিলেন, না কি তাকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
ভোলা সরকারি কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন তিনি। ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও কোনো পদে ছিলেন না। ছাত্রদলের অভিযোগ, তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ছড়ানো হচ্ছে।
এ নিয়ে মঙ্গলবার কলেজের সামনে ছাত্রদল মানববন্ধন করে। নেতারা বলেন, গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সুষ্ঠু তদন্তে দোষীদের চিহ্নিত করে বিচার দাবি করেন তারা।
ছাত্রীটির মা জানান, সেদিন সকালে প্রাইভেট পড়াতে বেরিয়েছিলেন মেয়ে। সাড়ে ১১টার মধ্যে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তবে ফোন ধরেননি। দিনভর ফোনে চেষ্টা করেও খোঁজ মেলেনি। পরে জানতে পারেন, একজন নারী লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন, পরে নিশ্চিত হন, ওই নারী তার মেয়ে।
লঞ্চের মাস্টার মো. মোবারক হোসেন হিজলা থানায় জিডিতে উল্লেখ করেন, ঘটনার সময় লঞ্চটি ভোলার ইলিশা থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিল। এক যাত্রী নদীতে ঝাঁপ দিলে লঞ্চ ঘুরিয়ে তাকে খোঁজা হয়, কিন্তু পাওয়া যায়নি। কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশকে জানানো হয়।
পরে উদ্ধার করা মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। পরিবারের সদস্যরা ছবি দেখে শনাক্ত করেন।
নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। লক্ষ্মীপুর সদর থানার ওসি মো. আবদুল মোন্নাফ জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন।
ছাত্রীটির মা জানান, একসময় মেয়ের বিয়ে হয়েছিল। স্বামী তালাক পাঠানোর পর দুটি মামলা চলছে। মা বলেন, ‘ওর বাবা না খেয়ে হলেও মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়েছে। আমাদের স্বপ্ন ছিল, ও মানুষ হবে।’
নৌ পুলিশ জানায়, মরদেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। পরিবারের দাবি—তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হোক।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল