বরগুনায় ভুয়া চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় বায়েজিদ (১৩) নামের ষষ্ঠ শ্রেণির এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত বায়েজিদ সদর উপজেলার বরগুনা ইউনিয়নের কালিরতবক গ্রামের বাসিন্দা মামুন মুছুল্লির বড় ছেলে এবং আমতলি উপজেলার চরকগাছিয়া দিনিয়া মাদ্রাসার ছাত্র ছিল।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার (২৩ জুন) দুপুর ১টার দিকে বায়েজিদের প্রচণ্ড জ্বর হলে তার বাবা তাকে স্থানীয়ভাবে পরিচিত পল্লী চিকিৎসক বিধান রঞ্জন সরকারের কাছে নিয়ে যান। অভিযোগ রয়েছে, কোনো রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই তিনি বায়েজিদকে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন। ওই ওষুধ সেবনের পর রাত ১টার দিকে বায়েজিদের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. এস এম শামসুল আরেফিন বলেন, “জ্বর হলে রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে উপসর্গ বুঝে চিকিৎসা দিতে হয়। সরাসরি হাই অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। এটি নিঃসন্দেহে অপচিকিৎসা।” তিনি সঠিক তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান।
প্রসঙ্গত, ঘটনার মাত্র দুই দিন আগে, ২৭ জুন বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম শরীয়ত উল্লাহর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তিনজন ভুয়া চিকিৎসককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। তাদের মধ্যে বিধান রঞ্জন সরকারও ছিলেন। আদালতে তিনি লিখিতভাবে মুচলেকা দেন যে, আর কখনো চেম্বারে বসবেন না এবং রোগী দেখবেন না।
তবুও সেই মুচলেকা অমান্য করে তিনি আবারও চেম্বারে বসে চিকিৎসা দেন, যার ফলশ্রুতিতে ঘটেছে শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু। এই ঘটনার পর জনমনে প্রশ্ন উঠেছে—চিকিৎসা ব্যবস্থার দুর্বলতা ও স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারির অভাব নিয়েই।
অভিযুক্ত বিধান সরকারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল