শিরোনাম
সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

সাংবাদিকের ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসীরা আটক হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক

কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার এক দিন পরই হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাধীন সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমনকে হুমকি দিলেন শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন। গতকাল দুপুরে দলবল নিয়ে মোহাম্মদপুরের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর খোকন যখন হুমকি দিতে আসেন, সুমন তখন একা ছিলেন। মামলা করা হলে তাকে দেখে নেবেন বলেও হুঙ্কার দিয়ে যান সরকার সমর্থিত এই কাউন্সিলর। ওদিকে গে ারিয়ায় দুই সাংবাদিককে আটকে রেখে মারধর ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া সেই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী শহিদুল ইসলাম খান রিয়াদ আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। ‘আমি ছাত্রলীগ করি, আমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না’- এমন কথা বলে বেড়াচ্ছেন তিনি গে ারিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ে।

১ ফেব্রুয়ারি সিটি নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের সময় বিভিন্ন স্থানে মোহাম্মদপুরের সাদেক খান রোডে মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, গে ারিয়ায় মাহবুব মমতাজীসহ অন্তত আট সাংবাদিক হামলার শিকার হন। এসব হামলার ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনো পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। সাংবাদিকদের ওপর হামলার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও র‌্যাব মহাপরিচালক সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এ অবস্থায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা আহত সুমনকে হুমকি দিয়ে যান হামলাকারীরা। চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি।

গতকাল বেলা ১২টার দিকে নবনির্বাচিত ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন দলবল নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আসেন। তিনি তার দুজন অনুসারীকে নিয়ে সুমনের বেডের কাছে যান। আহত সুমন একা শুয়ে ছিলেন। কাউন্সিলর এ সময় সুমনের বেডে বসেন। তিনি সুমনকে বলেন, তার বিরুদ্ধে যেন কোনো মামলা করা না হয়। এ সময় সুমন বলেন, যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধেই মামলা হবে। এ সময় উত্তেজিত হয়ে পড়েন কাউন্সিলর। তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনার ব্যাপারে কোনো মামলা করা যাবে না। মামলা করলে দেখে নেব।’ শরীর ও মাথায় প্রচ- ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন সুমন। খোকনের এমন হুমকি-ধমকিতে ভয় পেয়ে যান তিনি। ফোন করে তার সহকর্মীকে জানান। এর পরই খোকন তার লোকজন নিয়ে হাসপাতাল থেকে সটকে পড়েন। শনিবার ঢাকা সিটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনে থাকা সাংবাদিক সুমনকে মারধর ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকনের সন্ত্রাসীরা।

গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সাংবাদিক আহত হওয়াসহ নির্বাচনী সহিংসতার প্রতিটি ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার পর দুপুরে সুমনকে দেখতে ঢামেক হাসপাতালে এসে র‌্যাবের প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘সাংবাদিক সুমনের ওপর যারা হামলা চালিয়েছে তাদের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এদিকে গে ারিয়ার সেই সন্ত্রাসী শহিদুল ইসলাম খান রিয়াদ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন সাংবাদিক মাহবুব মমতাজী ও নুরুল আমিন জাহাঙ্গীর। তারা বলেন, নির্বাচনের এক দিন পার হলেও সন্ত্রাসী রিয়াদ ও তার সন্ত্রাসী গ্রেফতার না হওয়া আতঙ্কের ও উদ্বেগের।

সর্বশেষ খবর