শিরোনাম
শুক্রবার, ২৮ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

ফাইজারের টিকা ব্যবহার, চীনা টিকা কেনার অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফাইজার ও বায়োএনটেকের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা বাংলাদেশে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। এ ছাড়া চীনের সিনোফার্ম থেকে প্রতি ডোজ ১০ ডলার দরে দেড় কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কেনার দরপ্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এসব টিকা আগামী জুন-জুলাইয়ে দেশে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গতকাল ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকাসহ দেশে মোট চারটি টিকা অনুমোদন পেল। এর আগে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড- অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড, রাশিয়ার তৈরি স্পুৎনিক-ভি এবং চীনের সিনোফার্মের তৈরি টিকার অনুমোদন দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর।

টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফরম কোভ্যাক্স থেকে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ১ লাখ ৬০০ ডোজ টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশ। ফাইজারের টিকার ওই চালান আগামী ২ জুন দেশে এসে পৌঁছাবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ইতিমধ্যে জানিয়েছেন। ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকাও নিতে হবে দুই ডোজ করে। প্রথম ডোজ দেওয়ার তিন থেকে চার সপ্তাহ পর দিতে হবে দ্বিতীয় ডোজ। ১২ বছর বা তার বেশি বয়সীদের ওপর ফাইজারের টিকা প্রয়োগ করা যাবে।

চীনা টিকা কেনার অনুমোদন : চীনের সিনোফার্ম থেকে প্রতি ডোজ ১০ ডলার দরে দেড় কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কেনার দরপ্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় চীন থেকে সরকারি পর্যায়ে সরাসরি ওই টিকা কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহিদা আক্তার বলেন, জনস্বাস্থ্য সংরক্ষণ ও করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকাদান অব্যাহত রাখতে চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম থেকে গণচীনের তৈরি সার্স কোভ-২ ভ্যাকসিন কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেড় কোটি ডোজ টিকার মোট দাম পড়বে ১৫ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ হয় ১ হাজার ২৬৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রতি ডোজের দাম পড়বে ১০ ডলার। সিনোফার্ম প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে বাংলাদেশকে ১ কোটি ৫০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করবে জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব শাহিদা বলেন, এই কেনাকাটায় আমাদের দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। সরাসরি চীন সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের এই ক্রয় চুক্তি হচ্ছে। ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি বিশেষ আইনের আওতায় ভোলায় দুটি অনুসন্ধান কূপ এবং একটি মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ খননের লক্ষ্যে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় কোম্পানি গ্যাসপ্রমের সঙ্গে বাপেক্সের চুক্তির অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা কমিটি। টার্ন-কি পদ্ধতিতে ৬৪৮ কোটি ৩৯ লাখ ১১ হাজার ৮৫০ টাকায় কূপ তিনটি খনন করে দেবে গ্যাসপ্রম। এ ছাড়া ‘গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহনের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন’ প্রকল্পের পিএস ওয়ান প্যাকেজের আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ পেয়েছে অস্ট্রেলিয়ার এসএমইসিআই ইন্টারন্যাশনাল ও সুইডিশ ন্যাশনাল রোড কনসাল্টিং, বাংলাদেশের এসিই কনসাল্টস ও বিসিএল অ্যাসোসিয়েটসের জয়েন্ট ভেঞ্চার। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬ কোটি ৯২ লাখ ৩ হাজার ৫৯৩ টাকা।

 

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য ৬৫৮ কোটি ৪০ লাখ ৩২ হাজার টাকায় কমিউনিকেশন, নেভিগেশন অ্যান্ড সার্ভেইলেন্স-এয়ার ট্রাফিক সিস্টেম (সিএনএস-এটিএম) কেনার একটি প্রস্তাবও এদিন অনুমাদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি। ফ্রান্সের তালিস এলিনিয়ার থেকে জিটুজি ভিত্তিতে এসব সরঞ্জাম কিনবে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।

মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় আড়িয়াল খাঁ নদীতীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় ৬ দশমিক ৩ কিলোমিটার নদীতীর সংরক্ষণ কাজ এবং ১৪ দশমিক ৭৫০ কিলোমিটার ড্রেজিংয়ের কাজ খুলনা শিপইয়ার্ডের মাধ্যমে ৩৬৭ কোটি ২৮ লাখ ৪৮ হাজার ৯৫০ টাকায় করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সরকারি ক্রয়ের কাজে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আরও বেশি দরদাতা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়ে একটি প্রস্তাব তোলা হয়েছিল বৈঠকে।

 

ক্রয় কমিটি এ বিষয়ে আগে একটি মূল্যায়ন কমিটি করে দিয়েছিল। ক্রয় কাজে অধিকতর প্রতিযোগিতা সৃষ্টির জন্য পিপিএ এবং পিপিআরের কোথায় সংশোধন আনা যায় সে বিষয়ে সুপারিশ করেছিল কমিটি। সেই সুপারিশগুলোও বৈঠকে আলোচনা করা হয়।

 

সর্বশেষ খবর