শনিবার, ২১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

লন্ডনে হাজারো মানুষ শেষ বিদায় জানালেন গাফ্ফার চৌধুরীকে

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য

লন্ডনে হাজারো মানুষ শেষ বিদায় জানালেন গাফ্ফার চৌধুরীকে

গ্রীষ্মের লন্ডনে গতকাল সকালে হচ্ছিল বৃষ্টি। এ যেন কান্নার মতো ঝরছিল কিংবদন্তি লেখক, সাংবাদিক আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীকে শোক জানাতে। আর প্রকৃতির এ উজাড় করা কান্নায় শামিল হয়েছিলেন হাজারো মানুষ। শোকার্ত এমন পরিবেশে লন্ডন সময় বাদ জুমা লেখকের জানাজা অনুষ্ঠিত হয় ব্রিকলেন মসজিদে।

ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ যোগ দিয়েছিলেন জানাজায়। লেখককে শেষবারের মতো দেখতে আসা এসব মানুষের ভিড়ে মসজিদে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। ফলে অনেককেই বাইরে বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে জানাজায় শরিক থাকতে হয়েছিল।

১৯ মে বৃহস্পতিবার লন্ডন সময় সকাল ৬টা ৪৯ মিনিটে বার্নেট হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বরেণ্য লেখক। গতকাল তাঁর লাশ হাসপাতাল থেকে আনুষ্ঠানিকতা শেষে নিয়ে আসা হয়েছিল ব্রিকলেন জামে মসজিদের হিমাঘারে। তারপর বাদ জুমা ১টা ৪৫ মিনিটে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর ছেলে অনুপম চৌধুরী সবার কাছে বাবার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা সারা জীবন বাংলাদেশ ও মানুষের জন্য লিখেছেন, কথা বলেছেন।’ এ সময় বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজেদুর রহমান ফারুক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। জুমার পর আবহাওয়া ভালো হওয়ায় লাশ নিয়ে আসা হয় আলতাব আলী পার্ক শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। সেখানেও হাজারো মানুষ তাদের এই প্রিয় লেখককে বিদায় জানাতে আসেন। আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর লাশ ঢেকে রাখা হয়েছিল বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা দিয়ে। যুক্তরাজ্য হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম ফুল দিয়ে শেষ বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। এরপর একে একে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা এবং শেষ বিদায় জানানো হয় প্রিয় লেখককে। সম্প্রতি ব্রিটেনে ভ্রমণ করতে আসা সাবেক সরকারি কর্মকর্তা শাহরিয়ার বিপ্লব বলেন, ‘লন্ডনে আসার সময় অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল উনাকে দেখতে যাব। আজ উনার জানাজায় অংশ নিতে হলো। বাংলাদেশ হারিয়েছে একজন অভিভাবকে।’ ব্যারিস্টার সাঈদ আলী জিরু বলেন, ‘২০ বছরের বেশি সময় ধরে ছাত্রজীবন থেকে ব্রিটেনে আছি। তিনি আমাদের অভিভাবক ছিলেন।’ সাংবাদিক ও লেখক নবাব উদ্দিন বলেন, ‘আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী সারা বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীদের সম্পদ ছিলেন। ছিলেন তৃতীয় এ বাংলায় আমাদের ভরসার জায়গা।’ যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘লাশ বাংলাদেশে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশন কাজ করছে। খুব দ্রুত আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে লাশ দেশে পাঠানো হবে। তাঁকে শায়িত করা হবে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর