শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

জঙ্গি ছিনতাইয়ে মেহেদী ছিলেন প্রধান সমন্বয়ক : সিটিটিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের তিন দিন পর মেহেদী নামে একজনকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনিই ওই ঘটনার প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন বলে উল্লেখ করেছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান। এদিকে মেহেদীকে গতকাল আদালতে হাজির করা হলে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বিচারক।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, একটি মামলায় জামিনে থেকে মেহেদী আনসার আল ইসলামের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিলেন। পরবর্তীতে আদালত চত্বর থেকে চার জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। ওই ঘটনায় প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন তিনি। গত ২০ নভেম্বর ঢাকার আদালতপাড়া থেকে দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবকে ছিনিয়ে নেওয়ার দিন আদালতেই ছিলেন জামিনে থাকা মেহেদী। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মইনুল ও সোহেল প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত। তবে সেদিন তাদের আদালতে হাজির করা হয়েছিল মোহাম্মদপুর থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এক মামলার শুনানিতে। জামিনে থাকা মেহেদীও সেদিন হাজিরা দিতে আদালত গিয়েছিলেন। দুই জঙ্গিকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় সেদিন রাতে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। সেখানে মেহেদীকে ১৪ নম্বর আসামি করা হয়। সিটিটিসির প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, তারা চার জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। তবে প্রধান লক্ষ্য ছিল আরাফাত রহমান (অভিজিত হত্যায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি)। কিন্তু তাকে নিতে পারেনি।

মেহেদী জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পর তাদের পরবর্তী দিনগুলোতে চলাচল ও খরচ মেটানোর জন্য বেশ কিছু টাকাও দেয়। এই টাকাগুলো কোথা থেকে এসেছে সে তথ্যও পুলিশ জানতে পেরেছে। মেহেদী ২০১৩ সালে আনসার আল ইসলামে যোগ দেন এবং তার আগে হিযবুত তাহরীর সদস্য ছিলেন। মোহাম্মদপুর থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ২০১৭ সাল থেকে তিনি জামিনে ছিলেন এবং নিয়মিত হাজিরা দিয়ে আসছিলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, দুজন চিকিৎসককে আমরা ধরেছি। তারাও ঘরে বসেই জঙ্গিবাদে জড়িত ছিলেন। মনিটরিং করা হয়। তবে সবাইকে একসঙ্গে মনিটরিং করা যায় না সব সময়। আর জঙ্গিরা অন্য অপরাধীদের চেয়ে ভিন্ন। জঙ্গিরা বিশেষ করে আনসার আল ইসলামের সদস্যরা ‘কাটআউট’ সিস্টেমে থাকে। তাই তাদের ধরতে অনেক বেগ পেতে হয়। জানা গেছে, মেহেদীর বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে ‘রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী’ কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদপুর, সূত্রাপুর, বাড্ডায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তিনটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া ২০১০ ও ২০১২ সালে সিলেট থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দুটি মামলা রয়েছে। জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় গতকাল তাকে আদালতে নেওয়া হলে ঢাকা মহানগর হাকিম শফিউদ্দিন তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সর্বশেষ খবর