খুব দ্রুতই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ সফররত ইউরোপের মানবাধিকার প্রতিনিধি দল। এ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নও দ্রুতই এ গণহত্যার স্বীকৃতি দেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তারা। মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে আজ অনুষ্ঠিত হবে ‘বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১’ শীর্ষক সম্মেলন। এ উপলক্ষে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক গণহত্যা ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে প্রজন্ম ’৭১, আমরা একাত্তর ও ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফোরাম (ইআরএফ)।
জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যারমা দত্ত। বক্তব্য রাখেন ডাচ্ এমপি ও মানবাধিকার কর্মী হ্যারি ভ্যান বোমেল, আমস্টারডামের ভ্রিজে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. অ্যান্থনি হলসল্যাগ, যুক্তরাজ্যের সাংবাদিক ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন, ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফোরামের (ইবিএফ) সভাপতি বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া, ইবিএফের যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি আনসার আহমেদ উল্লাহ প্রমুখ। বক্তব্যে অ্যারমা দত্ত বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যার স্বীকৃতির জন্য আমরা ধাপে ধাপে একটি পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি। আমরা এ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে প্রত্যয়ী। জাতিসংঘ থেকে খুব দ্রুতই এ গণহত্যার স্বীকৃতি প্রত্যাশা করি আমরা। এ জন্য যারা এ গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে বাংলাদেশ সফর করছেন তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’ ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে যে আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ। মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ আমাদের আছে। গণহত্যার সংজ্ঞার সঙ্গে তা পুরোপুরি মিলে যায়। আমাদের এ দাবির সঙ্গে বিশ্বের মানুষের সম্পৃক্তাও বাড়ছে। গবেষক, রাজনীতিবিদ প্রত্যেককেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এ দাবি আদায়ে এগিয়ে আসতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ৫১ বছর পর এসে আমাদের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের দবি জানাতে হচ্ছে। এটা খুব মর্মান্তিক বিষয়। তবে আমরা প্রত্যয়ী। মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করা খুব দ্রুতই সম্ভব হবে বলে বিশ্বাস করি।’ হ্যারি ভ্যান বোমেল বলেন, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্ব রাজনীতিতিতে শীতল যুদ্ধ চলছিল। সে কারণেই যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের পক্ষে ছিল আর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারত ও বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেয়। এর প্রভাবেই এটি বিলম্বিত। এদিকে আজ বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে ১৯৭১-এ বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার স্বীকৃতির জন্য আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান। সভাপতিত্ব করবেন আমরা একাত্তরের চেয়ারপারসন মাহবুব জামান। সূচনা বক্তব্য রাখবেন আমরা একাত্তরের প্রধান সমন্বয়ক হিলাল ফয়েজী।