গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানীর গাড়িবহরে হামলায় একই কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী (দিদার) নিহত হয়েছেন। তিনি ঢাকায় ক্রিকেট আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন বলে জানা গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বিএনপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছেন। এতে সাংবাদিকসহ আরও অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টায় সদর উপজেলা ঘোনাপাড়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আহতরা হলেন- স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, তার স্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা (রত্না), রাজু বিশ্বাস, মাহাবুব খান, লিন্টু মুন্সী, গোপালগঞ্জের সালমান সিকদার, সুজন সিকদার, সবুজ সিকদার, ঢাকার মতিঝিল এলাকার নাসির আহমেদ মোল্লা, বাদশা মোল্লা, নিশান, হাসান প্রমুখ।
আহতদের মধ্যে ১৬ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে এবং তিনজনকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সেখান থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় এস এম জিলানী, তার স্ত্রী রওশন আরা ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বাদশা মোল্লার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত অন্যরা স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, আহতদের বেশির ভাগের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেশি অস্ত্রের কোপ আছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিকাল ৫টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেদগ্রাম মোড়ে আমরা শান্তিপূর্ণ পথসভা শেষ করে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করতে টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছিলাম। ঘোনাপাড়া মোড়ে পৌঁছালে গোপালগঞ্জ পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমিন মোল্লা, গোবরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জিকরুল ফকির, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলিমুজ্জামান ও হাসান মোল্লার নেতৃত্বে গাড়িবহরে হামলা করা হয়।’ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান বলেন, বেদগ্রাম মোড়ে বিএনপির একটি পথসভা শেষ করে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা হন। ঘোনাপাড়ায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের দুই থেকে তিন শ নেতা-কর্মী দেশি অস্ত্র নিয়ে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। এতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অন্তত ৫০ জন নেতা-কর্মী আহত হন। আওয়ামী লীগ নেতা আলিমুজ্জামান বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীরা গাড়িবহর নিয়ে যাওয়ার সময় ঘোনাপাড়া এলাকায় বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা করা হয়। হামলায় তিনি নিজেও আহত হয়েছেন।