ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে গতকাল হামলা হয়েছে। হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠনের সমর্থকরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটিকে ‘দুঃখজনক’ বলে বর্ণনা করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগরতলায় বাংলাদেশ সরকারি হাইকমিশনের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির সদস্যরা। এর পর আচমকা নিরাপত্তা বলয় ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন তারা। একপর্যায়ে মিশনের ভিতরে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যদের বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে হিমশিম খেতে হয়। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় সহকারী হাইকমিশন চত্বর। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে- ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা’। বিবৃতিতে বলা হয়, কোনো ক্রমেই কূটনৈতিক ও কনস্যুলার সম্পত্তিতে হামলা মেনে নেওয়া যায় না। ভারত সরকার ভারতে অবস্থিত হাইকমিশন, সহকারী ও উপ-হাইকমিশনগুলোর নিরাপত্তা বাড়ার উদ্যোগ নিয়েছে। গতকাল সকালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে যুক্ত হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ সভা আয়োজন করে। হিন্দু পরিষদের ত্রিপুরা শাখার সম্পাদক শঙ্কর রায় বলেন, চিন্ময় দাসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে তারা বিক্ষোভ করেছেন। তারা চান ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ তৈরি করুক।
ক্ষুব্ধ বাংলাদেশ : ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। গতকাল আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক ইতিহাসে এমন ঘটনা নজিরবিহীন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ভোরে আগরতলার হিন্দু সংগ্রাম সমিতির বিক্ষোভকারীদের একটি বৃহৎ দলের হিংসাত্মক বিক্ষোভ ও আক্রমণের জন্য বাংলাদেশ সরকার গভীরভাবে ক্ষুব্ধ। বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্যগুলো চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করে যে বিক্ষোভকারীদের পূর্ব পরিকল্পিত উপায়ে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে প্রাঙ্গণে আগ্রাসনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এ প্রক্রিয়ায় স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে তারা পতাকার খুঁটি ভাঙচুর করে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে এবং সহকারী হাইকমিশনের অভ্যন্তরের সম্পত্তিও ক্ষতিগ্রস্ত করে। পরিতাপের বিষয়, প্রাঙ্গণ রক্ষার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা শুরু থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ছিল না। এ ঘটনায় সহকারী হাইকমিশনের সব সদস্য গভীর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে জানানো হয় বিবৃতিতে। এর আগে, এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।