সৌদি রাজা সালমান বিন আবদুল আজিজ তার ছেলে মুহাম্মাদ বিন সালমানের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে চান বলে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।
ইন্সটিটিউট ফর (পারসিয়ান) গালফ এ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ৮০ বছর বয়স্ক অসুস্থ রাজা সালমান তার ছেলে ডেপুটি যুবরাজ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুহাম্মাদ বিন সালমানের কাছে শিগগিরই ক্ষমতা ছেড়ে দিতে চান এবং এ ব্যাপারে কয়েক সপ্তা’র মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। মুহাম্মাদ বিন সালমানকেই এখন সৌদি আরবের প্রকৃত রাজা ও সর্বেসর্বা বলে মনে করা হয়।
এই পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্তমান যুবরাজ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নায়েফকে তার পদগুলো থেকে সরিয়ে দেয়া হবে।
জানা গেছে, নায়েফ মার্কিন সরকারের সু-নজরে থাকা সত্ত্বেও তার চাচাতো ভাই ও বর্তমান রাজার ছেলে মুহাম্মাদ তাকে ক্রমেই একঘরে করে ফেলছেন।
অনেকেই মনে করছেন সৌদি আরবে ক্ষমতা নিয়ে শিগগিরই রাজ-পরিবারের মধ্যে তীব্র সংঘাত শুরু হয়ে যেতে পারে।
সৌদি আরবের বর্তমান মন্ত্রীসভার সব সদস্যই রাজ-পরিবারের সদস্য। তবে একমাত্র ব্যতিক্রম হলেন বর্তমান তেলমন্ত্রী আলী আন নায়িমি। তাকে এই পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে রাজা সালমানের ছেলে আবদুল আজিকে এ পদে বসানো হবে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
রাজা সালমান বর্তমান যুবরাজ নায়েফকে ডিঙ্গিয়ে তার ছেলেকে রাজা করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভাইদের সমর্থন পাওয়ার আশায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
গত বছরের অক্টোবর মাসে টাইমস ডেইলি একজন ভিন্নমতাবলম্বী সৌদি শাহজাদার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, রাজা সালমান এবং তার মনোনীত বর্তমান দুই যুবরাজের বিরুদ্ধে প্রাসাদ-অভ্যুত্থানের যে ডাক ওই রাজপুত্র দিয়েছেন সৌদি রাজ-পরিবারের ৮০ শতাংশই তা সমর্থন করেন। নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ করা থেকে বিরত ওই প্রিন্স এর আগে সৌদি রাজ-সরকারের ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আহ্বান জানিয়েছিলেন দুই খোলা চিঠি লিখে। সৌদি আরবের বর্তমান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ইবনে সৌদের ১৩ ছেলে এখনও বেঁচে রয়েছে। চিঠিতে রাজা সালমানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান শুরু করতে এই ১৩ প্রিন্সকে আহ্বান জানান তিনি। এই রাজপুত্র বা শাহজাদা লিখেছিলেন, তাদের উচিত ক্ষমতাহীন রাজা সালমানকে বিচ্ছিন্ন বা একঘরে করতে হবে। একই কাজ করতে হবে অতি মাত্রায় দাম্ভিক যুবরাজ নায়েফ এবং দেশে একের পর এক নানা বিপর্যয় সৃষ্টির নায়ক ডেপুটি যুবরাজ প্রিন্স মুহাম্মাদ বিন সালমান-এর ক্ষেত্রেও।
১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত সৌদি সাম্রাজ্যে রাজতান্ত্রিক প্রথা চালু রয়েছে। কেবল রাজার ছেলেই সেখানে রাজা হতে পারে। মার্কিন সরকারের ওপর অতি-মাত্রায় নির্ভরশীল সৌদি সরকার বর্তমানে সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্যে নানা সংকট সৃষ্টির হোতা হিসেবে সমালোচিত। জ্বালানী তেলের দাম নাটকীয় হারে কমে যেতে থাকায় দেশটি এখন অর্থনৈতিক সংকটের শিকার হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/১৮ জানুয়ারি ২০১৬/শরীফ