ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন বরিস জনসন। কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর দেশের ৭৭তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাম লেখালেন বরিস জনসন।
মঙ্গলবার ব্রিটেনের স্থানীয় ১২টায় বরিস জনসনের নাম ঘোষণা করা হয় ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের প্রধান হিসেবে। পার্টির সদস্যদের সরাসরি ভোটে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। বরিস জনসন ৯২১৫৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জেরেমি হান্ট পেয়েছেন ৪৬৬৫৬ ভোট। মোট ভোট দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার। ৮৭.৪০ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়েছে বলে জানিয়েছে দলটি।
নির্বাচিত হয়ে বরিস তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন দল ও দেশের কাজের নিয়োজিত হয়ে। তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী জেরেমী হান্ট ও বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
এদিকে, বরিস নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে মিডিয়া ও নানা সংস্থার জরিপে আগেই নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল। মঙ্গলবারের ঘোষণা ছিল শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা। তবে বরিসের এই নির্বাচিত হওয়া মেনে নিতে পারেননি দলের অনেক শীর্ষ নেতা।
গত কয়েকদিনে কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, এমন খবরে আতঙ্ক ছিল বর্তমান মন্ত্রিসভায়। তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে মন্ত্রিসভা ছাড়বেন বলে এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন শীর্ষ দুই মন্ত্রী। এছাড়া গত সোমবারে একজন প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট) কার্যকরে বরিসের কঠোর অবস্থানের বিরোধিতা করে রবিবার যে দু'জন মন্ত্রিপরিষদ ছাড়ার ঘোষণা দেন। তারা হলেন- অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড ও বিচারবিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড গোয়েক। সোমবার পদত্যাগ করেন পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দফতরের প্রতিমন্ত্রী অ্যালান ডানকান।
ব্রেক্সিট কার্যকর করা নিয়ে সৃষ্ট গৃহবিবাদের জেরে কনজারভেটিভ দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। গত ৭ জুন তিনি দলীয় প্রধানের পদ ছাড়েন। বুধবার বাকিংহাম প্রাসাদে রানির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেনে মে। সেই সঙ্গে রানির কাছ থেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব বুঝে নিলেন বরিস জনসন।
বরিস জনসন এর আগে ২০০৮ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দুইবার লন্ডন মেয়র ছিলেন। এ সময় লন্ডন ট্রান্সপোর্টসহ বিভিন্ন সংস্কার করেন তিনি।
২০১৬ সালে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোন এবং ২০১৮ সাল পর্যন্ত ফরেন সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ব্রেক্সিট নিয়ে মতপার্থক্য হওয়ায় তিনি ফরেন সেক্রেটারি থেকে পদত্যাগ করেন।
২০১৯ সালে ১৬ মে তিনি ঘোষণা দেন দলের প্রধান হিসেবে তিনি নির্বাচন করবেন। সেই ঘোষণার ৬৮ দিনের মাথায় দলের প্রধান নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি দেশের ৭৭তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন।
বিডি প্রতিদিন/২৩ জুলাই, ২০১৯/আরাফাত