ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটিতে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে ঘুরতে ছুটে এসেছেন শত শত মানুষ। জেলার পাহাড়ি ও সীমান্তঘেঁষা পর্যটন এলাকা দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা ছাড়াও এবার ব্যতিক্রমভাবে মদন উপজেলার উচিৎপুর ঘাটে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
প্রচণ্ড গরমে খানিকটা স্বস্তি পেতে অনেকে ট্রলারে করে হাওরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কেউবা সরাসরি পানিতে নেমে জলকেলিতে মেতে উঠেছেন। যদিও নানা অব্যবস্থাপনা রয়েছে, তবুও পানির টানে মানুষ ছুটে যাচ্ছে হাওরের দিকে।
এ সুযোগে নৌচালক, পরিবহন চালকসহ স্থানীয়রা কিছুটা অতিরিক্ত আয় করতে পারছেন। ঈদ মৌসুমে যানবাহনের আয়ও বেড়েছে কয়েকগুণ। কেউ কেউ ২০ টাকা বা তার বেশি ভাড়ায় এপাড় থেকে ওপারে পার হচ্ছেন। আবার অনেক পরিবার ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ছোট-বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকা রিজার্ভ নিয়ে দিনভর হাওর ভ্রমণ করছেন।
সরকারি পর্যটন রিসোর্ট থাকলেও সেটি বর্তমানে লিজ নিয়ে পরিচালনা করছে স্থানীয়রা। দর্শনার্থীদের কাছ থেকে টিকিটের বিনিময়ে প্রবেশ করিয়ে খাবারও সরবরাহ করছেন তারা। তবে হাওরের পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনের তৎপরতা আরও জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন অনেক পর্যটক।
ভ্রমণকারী সেলিম মিয়া বলেন, ‘অনেকে হাওরে এসে খাওয়ার পর প্লাস্টিক ও বর্জ্য যেখানে-সেখানে ফেলছেন। সচেতনতার অভাব রয়েছে। নৌকাগুলোর নিরাপত্তাও নেই বললেই চলে। প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার।’
ট্রলার চালক আবু মুসা জানান, ‘ঈদের সময়টাই আমাদের সিজনের মূল আয়। বছরের মধ্যে তিন-চার মাস পানি থাকে, তখনই নৌকা চলে। ঈদে বাড়তি কিছু আয় হয়, এটিই আমাদের ‘বোনাস’।
হাওরের পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহে স্থানীয়রা শুকনো মৌসুমে কৃষিকাজ, গবাদি পশু পালন এবং মাছ ধরার উপর নির্ভর করেন। তবে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন এবং প্লাস্টিক বর্জ্যে হাওরের জীববৈচিত্র্য ও মাছের উৎপাদন হুমকির মুখে পড়ছে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশ সচেতন নাগরিকরা।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ