একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সাজা থেকে খালাস পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার মো. মোবারক হোসেন। তাঁর করা আপিল মঞ্জুর করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ গতকাল এ রায় দেন। একই সঙ্গে মোবারককে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দণ্ডাদেশের রায় বাতিল করা হয়েছে। দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ১১ বছর আগে আপিল করেছিলেন মোবারক। রায় ঘোষণার সময় আদালতে মোবারকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও ইমরান এ সিদ্দিক এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম উপস্থিত ছিলেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো মামলায় এই প্রথম আপিল করে কেউ খালাস পেলেন বলে জানিয়েছেন মোবারকের আইনজীবীরা। রায়ের পর আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, ‘১ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদ ও ৩ নম্বর অভিযোগে মোবারককে যাবজ্জীবন কারাদ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। দুই অভিযোগ থেকে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল করা হয়েছে। অন্য কোনো মামলা না থাকলে তাঁর কারামুক্তিতে বাধা নেই।’ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর আপিল বিভাগে আপিল করেন মোবারক, যার ওপর ৮ জুলাই শুনানি শুরু হয়। ২২ জুলাই শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায়ের জন্য ৩০ জুলাই দিন রাখেন। সে অনুযায়ী গতকাল বেলা পৌনে ১১টার দিকে রায় ঘোষণা করেন আদালত।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মোবারককে মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়ে ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তাঁর বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটি প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে ১ নম্বর অভিযোগে মোবারককে মৃত্যুদ দেওয়া হয়। আর ৩ নম্বর অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদ দেন ট্রাইব্যুনাল। বাকি তিনটি অভিযোগ (২, ৪ ও ৫ নম্বর অভিযোগ) প্রমাণিত না হওয়ায় এগুলো থেকে খালাস দেওয়া হয় তাঁকে। ট্রাইব্যুনালের রায় থেকে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় মোবারক জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি জামায়াতের রুকন হন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে।
