সৌদি আরব এবং পারমাণবিক শক্তিধর দেশ পাকিস্তানের মধ্যে একটি যুগান্তকারী প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির ফলে কয়েক দশকের পুরনো নিরাপত্তা সম্পর্ক এক নতুন মাত্রা পেল। এই পদক্ষেপটি এমন এক সময়ে নেওয়া হয়েছে যখন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। সেই সাথে এই অঞ্চলের আরব দেশগুলো তাদের দীর্ঘদিনের নিরাপত্তা সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভরসা হারাতে শুরু করেছে।
বুধবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
পাকিস্তানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে, চুক্তি স্বাক্ষরের পর দুই নেতা একে অপরকে আলিঙ্গন করছেন। পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত দেশটির সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
গত সপ্তাহে ইসরায়েল কাতারের দোহায় হামলা চালায়। এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সহায়তার নির্ভরযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এই চুক্তিটি কোনো নির্দিষ্ট দেশ বা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে করা হয়নি বরং এটি দুই দেশের মধ্যে বহু বছরের গভীর সহযোগিতার ফল।
এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত সমীকরণে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। তবে পাকিস্তান পারমাণবিক ছাতা বা নিউক্লিয়ার অ্যামব্রেলা দেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই সৌদি কর্মকর্তা বলেন, এটি একটি ব্যাপকভিত্তিক প্রতিরক্ষা চুক্তি, যার মধ্যে সব ধরনের সামরিক উপায় অন্তর্ভুক্ত।
এই চুক্তির প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছেন, ভারত এই চুক্তির বিষয়ে সজাগ আছে। এর প্রভাব নিয়েও পর্যালোচনা করবে দিল্লি। অন্যদিকে, সৌদি কর্মকর্তা জানান, পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং তারা আঞ্চলিক শান্তি রক্ষায় কাজ করে যাবে।
পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই চুক্তিটি দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো এবং যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য করা হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, যেকোনো একটি দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসনকে উভয় দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে গণ্য করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল