প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য পোস্টাল ভোটিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা ভোটও দিতে পারবেন না। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ‘লক’ থাকবে তারা প্রবাসে থেকে ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন না বলে জানান নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, ‘যাদের এনআইডি লক রয়েছে, তারা ভোট দিতে পারবেন না।’
গত ফেব্রুয়ারিতেই ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারে ১০ জনের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) স্থগিত করে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। এবার প্রথমবারের মতো আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটে ভোটের ব্যবস্থা নিয়েছে এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইতোমধ্যে পোস্টাল ব্যালটে প্রবাসীদের ভোটিংয়ের জন্য ‘পোস্টাল ব্যালট বিডি’ নামে একটি নিবন্ধন অ্যাপ চালুর প্রক্রিয়া চলছে। নিবন্ধন করার পর নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে প্রতীকসহ ব্যালট পেপার পাঠানো হবে বিশেষ খামে। ভোট দেওয়ার পর তা দেশে ফেরত এনে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা হবে। কারও নাম উল্লেখ না করে ইসি সচিব জানান, এনআইডি লক থাকলে কেউ প্রবাসে থেকে ভোট দিতে পারবে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘(প্রবাসী ভোটিংয়ের জন্য) মূল বিষয় হলো নিবন্ধন। এআইডি লক থাকলে নিবন্ধনের জন্য এক্সেস পাবে না। সে ক্ষেত্রে লক করা এনআইডি যাদের, তাদের নিবন্ধনের সুযোগ নেই।’
আরও দুই লকার জব্দ : পূবালী ব্যাংকের পর এবার অগ্রণী ব্যাংকে থাকা শেখ হাসিনার আরও দুটি লকার জব্দ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। গতকাল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর দিলকুশায় অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে এই লকার দুটি জব্দ করা হয়।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনার নামে থাকা লকার দুটির নম্বর ৭৫১ ও ৭৫৩। কর ফাঁকির অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই লকার জব্দ করা হয়েছে। এর আগে ১০ সেপ্টেম্বর মতিঝিলের সেনা কল্যাণ ভবনে অবস্থিত পূবালী ব্যাংকের করপোরেট শাখায় শেখ হাসিনার ১২৮ নম্বর লকার জব্দ করে সিআইসি। সব মিলিয়ে অগ্রণী ও পূবালী ব্যাংকে তার তিনটি লকার জব্দ হলো।
শেখ হাসিনাসহ ৩৯ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা : জুলাই আন্দোলনে রাজধানীর ভাটারা থানাধীন এলাকায় মো. জাহাঙ্গীর হত্যা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৯ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম মো. জুয়েল রানার আদালত এ আদেশ দেন। আসামিরা বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন, এ আশঙ্কায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপপরিদর্শক নাজমুল আমিন দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তাদের দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ দেন।
শেখ হাসিনা ছাড়াও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল, মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য নুজহাত সারওয়াত তমা, মিরপুর যুবলীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. রাকিবুল ইসলাম, শেরেবাংলা নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বশির আহমেদসহ আরও অনেকে।