মিসর থেকে দক্ষিণ গাজায় লবণমুক্ত পানি সরবরাহের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত একটি গুরুত্বপূর্ণ পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শুরু করেছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আমিরাতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ওয়াম বুধবার জানিয়েছে, প্রকল্পটির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পরিবহনের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাঠানো কারিগরি দল। প্রায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ এ পাইপলাইন গাজা উপত্যকার ‘পানি সংকট’ নিরসনে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে ওয়াম।
এর আগে এ সপ্তাহে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ফিলিস্তিনি অঞ্চলের বেসামরিক বিষয় তদারকি সংস্থা সিওজিএটি জানায়, পাইপলাইনের নির্মাণ কয়েক দিনের মধ্যে শুরু হবে ও এতে কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে।
এ প্রকল্পটি মিসরের একটি লবণমুক্তকরণ প্ল্যান্টকে গাজার উপকূলবর্তী আল-মাওয়াসি এলাকায় যুক্ত করবে ও প্রতিদিন প্রায় ৬ লাখ মানুষকে পানি সরবরাহ করতে পারবে বলে জানিয়েছে সিওজিএটি।
ওয়াম আরো জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত সুপেয় পানির কূপ খনন ও সংস্কারের ‘একাধিক উদ্যোগ’ গ্রহণ করেছে।
গাজার ২৪ লাখ মানুষের জন্য নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা অত্যন্ত সীমিত। অনেক সময় তাদের লবণাক্ত, অনুপযুক্ত পানি কিংবা অনিয়মিত সাহায্যপ্রাপ্ত পানির ওপর নির্ভর করতে হয়। ফিলিস্তিনি পানি কর্তৃপক্ষের হিসেবে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ চলাকালীন গাজার ৮০ শতাংশের বেশি পানির অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, ‘জ্বালানি সংকট, ব্যাপক অবকাঠামোগত ক্ষতি ও পানি উৎসে প্রবেশাধিকারের অভাবে গাজার পানিসংকট দ্রুত অবনতি ঘটছে।’
মানবিক সংগঠনগুলো মাসের পর মাস ধরে লাখ লাখ উদ্বাস্তুর আশ্রয় নেওয়া দক্ষিণ গাজায় একটি সম্ভাব্য জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়ের ব্যাপারে সতর্ক করে আসছে। জাতিসংঘ সংস্থাগুলো মঙ্গলবার খাদ্য সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘ত্রাণের এ ক্ষীণ প্রবাহকে এখন মহাস্রোতে পরিণত করতে হবে।’
জাতিসংঘ-সমর্থিত বিশেষজ্ঞরা মঙ্গলবার সতর্ক করে বলেছেন, ‘সবচেয়ে ভয়ংকর দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি এখন গাজায় বাস্তবে রূপ নিচ্ছে, যা শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক ও বাধাহীন মানবিক সহায়তা পৌঁছালে রোধ করা সম্ভব।’
সূত্র : এএফপি
বিডি প্রতিদিন/নাজিম