রংপুরে হাঁড়িভাঙ্গা আমের সরকারিভাবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু না হলেও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সুস্বাদু হাঁড়িভাঙ্গা আম। এর কারণ প্রকৃতির খরতাপ। প্রচন্ড তাপদাহের কারণে এবার আগেভাগেই হাঁড়িভাঙ্গা আম পাঁকতে শুরু করেছে। এবার গাছে আমের মুকুল এক মাস দেরিতে এসেছে। ডিসেম্বরের শেষে জানুয়ারি প্রথম দিকে সাধারণত আমের মুকুল দেখা গেলেও এবার রংপুরে আমের মুকুল এসেছে ফেব্রুয়ারিতে। সেই হিসেবে আম পাঁকার কথা এক মাস দেরিতে।
কিন্তু প্রকৃতি তপ্ত থাকায় প্রায় একমাস আগেই আম পরিপক্ত হয়ে উঠেছে। কৃষি অফিসের ধারনা ছিল এবার হাঁড়িভাঙ্গা জুনের শেষে অথবা জুলাইয়ের প্রথমে পারা হবে। কিন্তু আগাম আম পেকে যাওয়ায় হাঁড়িআম জুনের ২০ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাত শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি অফিস ও আম চাষিদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, হাঁড়িভাঙ্গা আমের মুকুল সাধারণত জানুযারি মাসে আসে। এবার একটু দেরিতে এসেছে। পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে চাষিরা আম ঘরে তুলতে পারেন। এবার কিছুটা ব্যতিক্রম হয়েছে। দেরিতে মুকুল আসায় ফলও দেরিতে আসবে এমনটাই ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু মে মাসের শেষভাগ থেকে জুনের দুই সপ্তাহ এই অঞ্চলে প্রখর তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রী সেলিসিয়াসে উঠানামা করছে। এর প্রভাব পড়ে আম্রকাননে। গরমের জন্য আগেভাগেই আম পাকতে শুরু করেছে।
রংপুর জেলায় এবার আম আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩৩৫ হেক্টর। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙ্গা আম ১ হাজার ৯০০ হেক্টরের বেশি জমিতে চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে হাঁড়িভাঙ্গা প্রায় ১০/১২ মেট্রিকটন ফলন হয়। এবার হাঁড়িভাঙ্গা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ হাজার মেট্রিক টনের ওপর। যার মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকার বেশি। বর্তমানে প্রতিকেজি আম ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে রংপুরে হাড়িভাঙ্গা ছাড়াও ফজলি, কেরোয়া, এছাহাক তেলি, ছাইবুদ্দিন, আশ্বীনি, সাদা নেংড়া, কালা নেংড়া, কলিকাতা নেংড়া, মিশ্রী ভোগ, গোপাল ভোগ, আম্রপলি, সাদা রচি, চোচা, আঁটি জাতীয় আমের ফলন হয়। তবে হাড়িভাঙ্গা আমের ফলন বেশি হয়।
বদরগঞ্জের শ্যামপুরের আমচাষি শামছুজ্জামান শফিকুল ইসলাম জানান এবার আমের মুকুল দেরিতে এলেও আগাম আম পাকতে শুরু করেছে। দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এবার মুকুল জানুয়ারির পরিবর্তে ফেব্রুয়ারিতে এলেও প্রকৃতির কারণে আম আগাম পাকতে শুরু করেছে। তাই ২০ জুন থেকে আনুষ্ঠানিভাবে হাঁড়িভাঙ্গা আম বাজারজাত শুরু হতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল