ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার ভবনগর গ্রামে কয়েক যুগ ধরে দুই শতাধিক কালোমুখো হনুমান বসবাস করে। ক্ষুধার জ্বালায় এই হনুমানগুলো মানুষের বাড়িতে হামলা করত। কিছু মানুষের হাতে হনুমানগুলো প্রাণ হারাত। মানুষ হনুমানের এই বৈরী সম্পর্কের অবসানে এগিয়ে আসেন ভবনগর গ্রামের নাজমুল হোসেন। তিনি ২০১৮ সাল থেকে দুই শতাধিক হনুমানকে খাবার খাওয়াচ্ছেন। সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সংবাদপত্রে লেখালেখি করছেন ২০১৯ সাল থেকে। প্রকৃতিতে হনুমানদের জন্য এখন পর্যাপ্ত খাবার নেই। ওরা কী খেয়ে বাঁচবে? এ ভাবনায় নাজমুল হোসেন নিজেই ২০১৮ সালে পাকা কলা, পাউরুটি নিয়ে ওদের কাছে ছুটে যান। প্রথম দিকে হনুমানগুলো ভয় পেলেও এখন ওরা নাজমুলের বন্ধু। ডাক দিলেই ছুটে আসে। পরম নির্ভরতায় হাত থেকে খাবার নিয়ে খায়। অসুস্থ হলে সেবা নিতেও ভয় করে না মোটেও। ২০টির মতো হনুমানের চিকিৎসা করেছেন তিনি। নাজমুল জানান, হনুমানগুলো বেশির ভাগ হাত-পা ভেঙে, মাথায় আঘাত পেয়ে অসুস্থ হয়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে তিনি এদের চিকিৎসা করান। সমস্যা জটিল হলে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সাহায্য নেন। হনুমানের বাইরে দুটি শিয়াল, দুটি মেছো বিড়াল, বিভিন্ন প্রজাতির ১০টি পাখি তাঁর চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বনে ফিরে গেছে বলে তিনি জানান। নাজমুল হোসেন কৃষিকাজও করেন। তাঁর ফুল, কমলা, মাল্টা, আম, কলার বাগান রয়েছে। তিনি হনুমানদের জন্য রুটি-কলার পাশাপাশি বাদাম, সবজি, ফলমূল ইত্যাদি খাওয়াতে শুরু করেন। হনুমানদের প্রতি নাজমুলের সখ্যতার খবর বন বিভাগের নজর এড়ায়নি। ২০২১ সালে প্রথম বন অধিদপ্তর সপ্তাহে তিন দিন সামান্য পরিসরে কিছু খাবার দেয় হনুমানদের জন্য। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সাল থেকে বন বিভাগ থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১১ কেজি পাকা কলা, এক কেজি বাদাম, দুই কেজি রুটি বরাদ্দ দেয়। বর্তমানে খাবারের বাজেট প্রায় ২৩ কেজি। এর মধ্যে আছে ১৬ কেজি পাকা কলা, দুই কেজি ৪০০ গ্রাম বাদাম, দুই কেজি ৪০০ গ্রাম রুটি, দুই কেজি সবজি। অবশ্য এই খাবারের সঙ্গে দুই কেজির মতো শাকসবজি, ফলমূল কিনে মিশিয়ে নেন নাজমুল। প্রায় ২৫ কেজি খাবার পরিবেশন করতে গিয়ে নাজমুলকে পুরো গ্রাম চষে বেড়াতে হয়। কারণ দুই শতাধিক হনুমান সব সময় এক জায়গায় থাকে না। বন বিভাগের বরাদ্দ আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি নাজমুল। নাজমুল বলেন, ‘এখন মাঝে মাঝে হনুমানরা আমার বাড়িতে বাসার ছাদে এসে বসে থাকে। আমার সঙ্গে ওরা আনন্দ উল্লাস করে, এমনকি আমাকে ঘিরে রাখে এটা বেশ আনন্দদায়ক।’ নাজমুল শিয়াল, বনবিড়াল, থেকে শুরু করে পশুপাখিসহ সব ধরনের বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় নিরলস কাজ করছেন। বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট হ্যান্ডেলিং প্রশিক্ষণ বিষয়ে তিনি ট্রেনিংপ্রাপ্ত। জানালেন, যতদিন বেঁচে আছেন বন্যপ্রাণীদের জন্য কাজ করে যাবেন। এমনটাই তাঁর ইচ্ছা।
শিরোনাম
- যেসব এলাকায় শুক্রবার ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না
- পুঁজিবাজার: সূচকের বড় উত্থানে চলছে লেনদেন
- তথ্য যাচাইয়ে সাংবাদিকদের আরও সতর্ক হতে হবে
- লাগামহীন খুন সন্ত্রাস চাঁদাবাজি
- মেসির জোড়া অ্যাসিস্টে মায়ামির জয়, ডি পলের অভিষেক
- ফিলিস্তিনকে এবার স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা কানাডার
- জামিন পেলেন সেই ফারাবী
- মিয়ানমারের ‘দুর্লভ খনিজে’ চোখ যুক্তরাষ্ট্রের
- ভূমিকম্পের পর এবার রাশিয়ায় ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত
- অ্যাঙ্গোলায় জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সহিংস বিক্ষোভে নিহত ২২
- ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদিকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
- ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার হুমকি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্কতা
- ধোঁকা দেয়ার চিন্তা মনে হয় না কোনো দলের আছে : সালাহউদ্দিন
- শিশুদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশে পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা
- এমন অবস্থা তৈরি করবেন না যাতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ফেরার সুযোগ পায় : ফখরুল
- দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্টকে জিজ্ঞাসাবাদে নতুন ওয়ারেন্ট চায় প্রসিকিউশন
- সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ১,৩১৬
- এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বিধিভঙ্গের ৫১ অভিযোগ
- হাসিনাকে রাতের ভোটের আইডিয়া দেন জাবেদ পাটোয়ারী
- সরকার পরিচালনা করতে চাইলে নাগরিকদের কথা শুনতে হবে: তারেক রহমান
হনুমানের সঙ্গে সখ্য
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর