ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় এবার কাগজি লেবুর বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠের পর মাঠ লেবুগাছে ফলেছে থোকায় থোকায় হলুদ আর সবুজ লেবু। কিন্তু উৎপাদনের এই প্রাচুর্য কৃষকের মুখে হাসি ফোটানোর বদলে এনেছে চরম হতাশা। বাজারে লেবুর দাম এতটাই কমে গেছে, উৎপাদন খরচও উঠছে না। বর্তমানে এক টাকায় দুটি কাগজি লেবু বিক্রি হচ্ছে, যা কৃষকের জন্য এক বড় দুঃস্বপ্ন। লাভ তো দূরের কথা, আসল পুঁজি নিয়েও টানাটানি শুরু হয়েছে। শৈলকুপার চাঁদপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য, যিনি দুই বিঘা জমিতে লেবুবাগান করেছেন, হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, লেবু চাষে যে পরিমাণ শ্রম, সময় আর অর্থ ব্যয় হয়, বর্তমান দামে তা পুষিয়ে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সার, কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরি সব মিলিয়ে যে খরচ হয়, তা এখন লেবু বিক্রি করে উঠানো যাচ্ছে না। গাছের লেবু পেকে ঝরে পড়েছে, আমরা কী করব বুঝতে পারছি না। অনেক কৃষকই এখন উৎপাদিত লেবু নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কেউ কেউ পাকার আগেই গাছ থেকে লেবু সংগ্রহ করছেন, কারণ পেকে গেলে পরিবহন ও সংরক্ষণে খরচ আরও বাড়বে, আর দামও সেই অর্থে বাড়ার কোনো লক্ষণ নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান জানান, এই সংকট কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এবং উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণে সরকারি সহায়তা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি লেবুর বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে নতুন বাজার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে, যা কৃষকদের এই বিরাট ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সাহায্য করবে।