ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সঙ্গে দেশটির মুসলমানদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে মনে করেন দিল্লির জামে মসজিদের শাহী সৈয়দ আহমেদ বুখারি। পাশাপাশি এনআরসি প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, এটি এখনও আইনে পরিণত হয়নি।
কয়েকদিন আগে রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল পাস হয়েছে। এরপর থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। সেই আন্দোলনের প্রসঙ্গে শাহী ইমাম বলেন, আন্দোলন ভারতের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে তা নিয়ন্ত্রণে করা উচিত। নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ২০১৫ সালের আগে ভারতে আসা অমুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার পথ প্রশস্ত করার কথা বলা হয়েছে। বিলটি রাজ্যসভায় পাস হওয়ার পর থেকেই উত্তর-পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ শুরু হয়। ক্রমে তা ছড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও।
এই আইনের বিরোধিতা করে বিরোধী দলগুলো এবং প্রতিবাদীরা সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন জমা দিয়েছে। তাদের দাবি, এই আইনে ধর্মীয় বৈষম্যের ভিত্তিতে বিভাজন করা হয়েছে।
এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দিল্লির জামে মসজিদের শাহী ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারি বলেন, ‘‘প্রতিবাদ ভারতের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। কেউ আমাদের এটা করা থেকে আটকাতে পারবে না। যদিও এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, এটা নিয়ন্ত্রিতভাবে হওয়া উচিত। নিজেদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।''
তিনি আরও বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন এখন আইনে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে রয়েছে এনআরসি, যা ঘোষণা করা হয়েছে, কিন্তু এখনও আইনে পরিণত হয়নি। সিএএ-র অধীনে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আগত মুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। ভারতের মুসলিমদের এর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।''
এদিকে, ইমাম আহমেদ বুখারি সকলকে সংযত হওয়ার আবেদন করেছেন। গত রবিবার জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের প্রেক্ষিতেই তিনি এই আর্জি জানান। মঙ্গলবার প্রতিবাদ দেখা গেছে পূর্ব দিল্লির সিলামপুর ও ব্রিজপুরিতে। সেখানেও পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া ও গাড়ি ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশও পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ করে ও টিয়ার গ্যাস ছোড়ে।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব