ইরাকের রাজধানী বাগদাদে মার্কিন হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ডের (আইআরজিসি) অভিজাত শাখা কুদস বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হয়েছেন। সোলাইমানিকে হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দিয়েছে নানা দেশ।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এটি মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা বাড়িয়ে দেবে। জেনালের কাসেমকে হত্যার ঘটনাকে তারা ‘এক হঠকারী পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখছেন।
এ ঘটনায় ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ প্রকাশ করেছে চীন। তারা সব পক্ষ বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘শান্ত থাকা ও সংযম দেখানোর’ আহ্বান জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেনারেল সোয়াং শুক্রবার বলেন, চীন মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পাশাপাশি ইরাকের স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানাচ্ছে।
ইরাকের সংসদের ডেপুটি স্পিকার হাসান আল কাববি জানিয়েছেন, এখন সময় এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের বেপরোয়া ও ঔদ্ধত্য আচরণের ইতি টানার। ইরাকের ভেতরে মার্কিন উপস্থিতির অবসান ঘটানোর জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শনিবারের অধিবেশনটি নিবেদিত থাকবে।
বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহাদি এ জরুরি অধিবেশন আহ্বান করে বলেন, ইরাকে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইরাকি বাহিনীগুলোকে প্রশিক্ষণ দেয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ। শুক্রবারের হামলাটি এ শর্তের লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গ্রিস সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসছেন। ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত গোলান মালভূমির মাউন্ট হারমনে একটি স্কি রিসোর্ট বন্ধ করতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আদেশ দিয়েছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি তার দেশের রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনীর কমান্ডার কাসেমকে যুক্তরাষ্ট্রের হত্যার ঘটনাকে এক ‘জঘন্য অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রুহানি শুক্রবার এক টুইটে জানান, মহান জাতি ইরান বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন বিমান হামলার প্রতিশোধ নেবে। মার্কিন বাড়াবাড়ি প্রতিরোধের পথ চলমান থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের ‘অবিলম্বে’ ইরাক ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর শুক্রবার এক বিবৃতিতে ইরাক ও ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেছে।
এ ঘটনাকে ‘বিশ্বাসঘাতক আমেরিকার অপরাধমূলক আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এর কঠোর নিন্দা জানিয়েছে সিরিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, ইরাকের অস্থিতিশীলতায় যে যুক্তরাষ্ট্র দায়ী তা এ হামলা পুনরায় প্রমাণ করেছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন