দীর্ঘ ১৯ বছরের আফগান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কাতারে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। কাতারের মধ্যস্থতায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং তালেবান নেতাদের উপস্থিতিতে এ শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয় দোহায়। তখন তালেবানকে সন্ত্রাসবাদ এড়িয়ে চলার শর্তে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের আশ্বাসে উভয়েই চুক্তিতে সম্মত হয়।
তবে শান্তিচুক্তির পরও আফগান সরকারের দেওয়া এক পরিসংখ্যানে তালিবানের কার্যকলাপের ভিন্ন এক চিত্র সামনে এলো। বলা হচ্ছে, ফেব্রুয়ারির সেই শান্তিচুক্তির পরও আফগানস্তানে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৫০টি সন্ত্রাসবাদী ঘটনা ঘটে চলেছে। যার মধ্যে ৪০টির পেছনেই রয়েছে তালেবানসহ অন্যান্য সরকারবিরোধী সন্ত্রাসী গ্রুপ।
আফগানস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল বলছে, গত বছরের তুলনায় আফগানস্তানে চলতি বছরে শতকরা ৩৪ ভাগ সন্তাসবাদ বেড়েছে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তিচুক্তির পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনও আলোচনার তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। যদিও সন্ত্রাসবাদ বেড়েই চলেছে। কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বহু বেসামরিক আফগানি ও নিরাপত্তাকর্মীর প্রাণ।
অভিযোগ রয়েছে, তালেবান গত ২০ দিনে শান্তিচুক্তির লঙ্ঘন করেছে। যদিও তাদের জন্য চুক্তিতে শর্ত ছিলো প্রাদেশিক রাজধানী ও দেশের প্রধান মহাসড়কগুলোতে কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম না চালানোর। তবে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে। বলা হচ্ছে, তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে এয়ারস্ট্রাইকসহ প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে। গত ২২ জুলাই আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় অনন্ত ছয় স্থানীয় তালেবান কমান্ডার নিহত হয়েছে।
আফগানস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসাদুল্লাহ খালিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে এ হামলার ঘটনায় অন্তত ৮ জন বেসামরিক আফগানিরও প্রাণহানি হয়েছে, একইসঙ্গে আরও ২০ জন এ ঘটনায় আহত হয়েছে। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। উল্লেখ্য, গত ১০ দিনে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী ও তালেবানের মধ্যে মারাত্মক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে চলেছে দেশটির গাজনি, পার্বন, নানগারহার, হিরাত, লোগার, ময়দান ওয়ার্দাক, ঘোর ও কুন্দাজ প্রদেশে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক