ইজ্জেলদিন আবুইলাইশ ইসরায়েলের হাসপাতালে কর্মরত প্রথম ফিলিস্তিনি হিসেবে পরিচিত।
টিভির লাইভ সম্প্রচারের মধ্যে ফোনে তিন মেয়ে হত্যার ভয়াবহ বর্ণনা দেওয়ার প্রায় ১৫ বছর পর এবার ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলায় আবারও আবুইলাইশ তার পরিবারের মর্মান্তিক ঘটনার সঙ্গে লড়াই করে চলছেন।
এবার গত অক্টোবরের শেষ দিকে গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় আবুইলাইশের যৌথ পরিবারের ২০ জনের বেশি সদস্য নিহত হয়েছেন।
এর আগে ২০০৯ সালে গাজায় নিজের বাড়িতে ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলার আঘাতে তার ২১, ১৫ ও ১৩ বছর বয়সী তিন মেয়ে ও ১৭ বছর বয়সী ভাতিজি নিহত হয়। ইসরায়েলের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টেন টিভির লাইভে তাদের ভয়াবহ সেই ঘটনা বর্ণনা করার পর তিনি ব্যাপক পরিচিত হয়ে ওঠেন।
২০০৮ সালের শেষ দিকে ও ২০০৯ সালের শুরুতে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ হয়। তখন প্রতিদিন ইসরায়েলের টেলিভিশনে সাবলীল হিব্রুতে যুদ্ধের সর্বশেষ তথ্য সরবরাহ করেন আবুইলাইশ।
২০০৯ সালের ১৬ জানুয়ারি আবুইলাইশ তার বন্ধু ও চ্যানেল টেনের প্রতিবেদক সলোমি এলদারকে ফোন দেন। তিনি তখন মুঠোফোনে আবুইলাইশের ভয়েস মেসেজ পড়ার সময় স্পিকার অন করে দেন, যা টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার হয়।
টেলিভিশনের সেই মুহূর্তটি উপস্থাপক ও ইসরায়েলের দর্শকদের অন্তর কাঁপিয়ে দিয়েছিল। ফোন সচল রেখেই সন্তান হারানোর দুঃখ নিয়ে আবুইলাইশ বলছিলেন, ‘আল্লাহ, আল্লাহ, আমরা কী করেছি?’
ওই দিন পরিবারের আহত সদস্যদের ইসরায়েলের একটি হাসপাতালে ভর্তি করান আবুইলাইশ। স্বজন হারানোর যন্ত্রণা নিয়েই সংবাদমাধ্যমের সহায়তায় সাম্য ও শান্তির পক্ষে প্রচারণা চালান তিনি।
পাঁচবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত (৬৮) এই ফিলিস্তিনি চিকিৎসক বেঁচে থাকা সন্তানদের নিয়ে কানাডায় বসবাস শুরু করেন। তিনি এখন ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর দাল্লা লানা পাবলিক হেলথ স্কুলে অধ্যাপনা করছেন।
সূত্র : আল জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ