গাজার নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের হাতে থাকলেও আন্তর্জাতিকভাবে মাহমুদ আব্বাস ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃত। ৮৮ বছর বয়সী আব্বাস ও তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েল ও তার পশ্চিমা মিত্ররা গাজা থেকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের নির্মূলের পর সেখানে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে চায়।
এই পরিস্থিতিতে, গাজা শাসনভার অন্য কারও হাতে তুলে দিতে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এই কমিটি উপত্যকার শাসনভার গ্রহণ করবে। এই কমিটিতে ফিলিস্তিনের সব পক্ষের প্রতিনিধিত্ব থাকার কথা থাকলেও, বাস্তবে এর সদস্যরা হবেন ফাত্তাহর সাবেক নির্বাসিত নেতা মোহাম্মদ দাহলানের বিশ্বস্ত ব্যক্তিরা।
মোহাম্মদ দাহলান বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। ২০০৭ সালে গাজার নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর তিনি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছিলেন। তবে দুর্নীতি ও অভ্যুত্থানের অভিযোগে ২০১১ সালে তাকে ফিলিস্তিন ছাড়তে বাধ্য করা হয়। আব্বাসের ঘনিষ্ঠ নেতাদের চাপে তিনি নির্বাসিত হলেও, দাহলান সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জাতীয় কমিটি গঠনের লক্ষ্যে দাহলান ও আমিরাতের কর্মকর্তারা সম্ভাব্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছেন। এই প্রতিনিধিদের অধিকাংশেরই মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। দাহলান আবুধাবি থেকে কায়রো যাতায়াত করছেন এবং জাতীয় কমিটির প্রথম কাজ হবে গাজায় আরব ও আন্তর্জাতিক সেনাদের প্রবেশ নিশ্চিত করা।
আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলো আব্বাসকে এই পরিকল্পনা মেনে নিতে চাপ দিচ্ছে, যার মধ্যে মিশর ও জর্ডানের নাম উল্লেখযোগ্য। তবে কাতার এই পরিকল্পনা থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছে এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের শীর্ষ নেতৃত্বকে চাপ দিয়ে যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে গাজা, যেখানে বিভিন্ন দেশের স্বার্থ জড়িত, সেখানকার শাসনভার নিয়ে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল