রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারতকে বড় ভাই হিসেবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের ক্রেতা সুরক্ষা ও উপভোক্তা মন্ত্রী সাধন পান্ডে।
রবিবার কলকাতার ইন্ডিয়ান ফর কালচারাল রিলেশনস (আইসিসিআর)-এর সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়ামে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের ফাঁকে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এমনিতেই রোহিঙ্গা সংকটে জর্জরিত। এমন অবস্থায় ভারতের উচিত বড় ভাইয়ের মতো তাদের পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু বাংলাদেশের পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির কয়েকজন নেতা বলছেন, ‘বাংলাদেশিদের হটাও’। এই ধরনের মন্তব্য করাটা ঠিক নয়, এটা মোটেও ভারতের অনুকূলে যাবে না। ঠাণ্ডা মাথায় এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই এই সমস্যা সমাধান করা উচিত।’
অাসামের জাতীয় নাগরিক পঞ্জির খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়া মানুষকে বিতাড়নের ঘটনায় নিকটতম প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে বলেও এদিন মন্তব্য করেন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের এই প্রভাবশালী মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ, তারা সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে ভারত বিরোধী যেকোন নাশকতা বা কর্মকাণ্ড ঠেকাতে সে দেশের বর্তমান সরকার সুনিশ্চিত করেছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশি বিতাড়নের কথা বলে সেদেশের ওপর নতুন করে কোন চাপ সৃষ্টি করা একেবারেই উচিত নয়।’
তাঁর অভিমত, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীও সে দেশকে সহায়তা করেছিল। মিয়ানমারেও গণতন্ত্র না থাকার কারণে সেখান থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে চলে আসছে। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে যাতে তারা সুষ্ঠুভাবে নিজেদের দেশে ফেরত যেতে পারে। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকেই বাংলাদেশ সরকারও সেই সব রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।’
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বারুইপুরেও সেই মানবিকতার কারণেই কয়েকশ' রোহিঙ্গা পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে এদিন জানান রাজ্যটির মন্ত্রী। একটা গণতান্ত্রিক দেশ থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে এখানে বাঁচার জন্য চলে আসছে-আর আমরা তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেবো-এই নীতিতে আমরা বিশ্বাসী নই।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই অাসামে প্রকাশিত হয় জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়া তালিকা। এনআরসি’এর কাছে জমা পড়া ৩.২৯ কোটি আবেদনকারির মধ্যে চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ২.৮৯ কোটির কিছু মানুষের নাম। তালিকা থেকে বাদ পড়ে প্রায় ৪০ লাখ বাসিন্দা। এরপরই বিষয়টি নিয়ে দেশটিতে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধীদের মধ্যে জোর রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়।
বিডি-প্রতিদিন/২৬ আগস্ট, ২০১৮/মাহবুব