ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে ৫১ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করল আহমেদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চের পুলিশ। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই প্রতারণা এবং মানব পাচার সম্পর্কিত বেআইনি কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সাথে উদ্ধার করা হয়েছে একাধিক অপ্রাপ্তবয়স্ক নারীদের।
ভুয়া নথি দিয়ে ভারতীয় পরিচয় পত্র সংগ্রহ ও মানব পাচারের অভিযোগ পেয়ে সম্প্রতি তদন্তে নামে আহমেদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চ। আর সেখানেই বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের খোঁজ পায় তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
ক্রাইম ব্রাঞ্চের ভূমিকা প্রশংসা করে গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে জালিয়াতির খবর পেয়ে তদন্তে নেমে ৫১ জন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। তাদেরকে বাংলাদেশ ফেরত পাঠানো হবে।'
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৬৫, ৪৬৭ এবং ৪৬৮ ধারার অধীনে দায়ের করা প্রথম মামলায় ফারুক মণ্ডলের নেতৃত্বে একটি অপরাধমূলক চক্রের হদিস পেয়েছে- যেখানে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে ভুয়া ভারতীয় পরিচয় পত্র তৈরির অভিযোগ রয়েছে। ওই ঘটনায় ফারুক এবং তার এক সহযোগী- দুই ভারতীয় নাগরিককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তের অংশ হিসাবে বর্তমানে ২০০ টিরও বেশি সন্দেহভাজন ভুয়া নথি জব্দ করা হয়েছে এবং সেগুলিকে পরীক্ষা করছে তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
এর পাশাপাশি মানব পাচারের সাথে জড়িত একটি মামলায়, অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের পাচারের সাথে জড়িত সন্দেহে একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে আহমেদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চ। ওই সমস্ত অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের আহমেদাবাদে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়েছিল বলেও জানা গেছে। পরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রচুর সংখ্যায় অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের উদ্ধার করে তদন্তকারী কর্মকর্তারা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অনৈতিক পাচার (প্রতিরোধ) আইন এবং পকসো আইনের বিভিন্ন ধারায় নথিভুক্ত করা হয়েছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় শতাধিক এর বেশি নারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাদেরকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের ধারণা। তদন্তকারীরা এখন এসব অপরাধের সাথে সম্পর্কিত আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
একদিকে ভুয়া নথি দিয়ে ভারতীয় পরিচয় পত্র সংগ্রহ অন্যদিকে জোর করে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের পতিতা বৃত্তিতে বাধ্য করা- দুটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৫১ জন বাংলাদেশিকে আটক করেছে আহমেদাবাদ টাইম ব্রাঞ্চ। ভুয়া ভারতীয় পরিচয় পত্র সংগ্রহ করে এই সমস্ত বাংলাদেশিরা আহমেদাবাদের কুবের নগর, সদর নগর, নারোদা পাতিয়া, শাহ-ই-আলম, চান্দোলা লেক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বসবাস করছিল। শুধু তাই নয়, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে আরো দেড় শতাধিক মানুষকে জিন্দাবাদ জিজ্ঞাসাবাদ করছে ক্রাইম ব্রাঞ্চের কর্মকর্তারা।
বিডি প্রতিদিন/আশিক