ভারতের আসামের জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (এন আর সি) তালিকা থেকে লাখ লাখহাজার হাজার ভারতীয় নাগরিকের নাম বাদ পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
রবিবার টুইট করে উদ্বেগের কথা জানিয়ে মমতা লেখেন, "প্রথমে আমি এনআরসির চরম ব্যর্থতা নিয়ে অতটা অবগত ছিলাম না। পরে একাধিক জায়গা থেকে খবর আসতে লাগল। থেকে প্রায় এক লাখ গোর্খা মানুষের নাম বাদ পড়া নিয়ে আমি খুবই মর্মাহত।"
তিনি আরও জানান, "সিআরপিএফ এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য, ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ এর পরিবারের মানুষজনসহ হাজার হাজার প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকের নাম এনআরসি তালিকায় অন্তর্ভূক্তি হয়নি।"
এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সরকারের দেখা উচিত যে প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকরা যেন তালিকা থেকে বাদ না পড়ে, সমস্ত প্রকৃত ভারতীয় ভাই-বোনদের প্রতি ন্যায় বিচার করা হচ্ছে না।"
উল্লেখ্য, শনিবারই অসমে এনআরসি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ বাসিন্দার নাম। তালিকায় অন্তর্ভুক্তি হয়েছে ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জনের নাম। আর তালিকা প্রকাশের পরই রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর শুরু হয়ে গেছে। তালিকা নিয়ে কংগ্রেস বিরোধী দল এমনকি বিজেপি শাসিত রাজ্য সরকারের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তার অভিযোগ, ‘এই তালিকা থেকে প্রকৃত ভারতীয়দেরই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানোর উদ্দেশ্য এতে সফল হবে না বলেও তার দাবি। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, নাগরিকপঞ্জি নিয়ে সমস্ত আশা হারিয়ে ফেলেছি। তথ্যকারচুপির অভিযোগ এনে তার দাবি পুনরায় সেই নথিগুলি খতিয়ে দেখা হোক।
পরে ট্যুইট করে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি জানান, ‘১৯৭১ সালের আগে বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুদেরও অনেকের নাম নেই জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে। কারণ কর্তৃপক্ষ রিফিউজি সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে চায়নি। আবার অনেক নাম এমনও রয়েছে যেগুলি ডেটায় দুর্নীতিতে ঢুকেছে।’
তিনি আরও জানান, ‘বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকাগুলোতে কম করে ২০ শতাংশ রি-ভেরিফিকেশন ও বাকি জেলাগুলিতে ১০ শতাংশ রি-ভেরিফিকেশন করার জন্য রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার আবেদন করেছে। নির্ভুল ও স্বচ্ছ এনআরসি তালিকা প্রস্তুতের জন্য সুপ্রিম কোর্টের উচিত সেই আবেদন মঞ্জুর করা।’
মমতা
তবে কেন্দ্র জানিয়েছে, যাদের নাম চূড়ান্ত নাগরিক তালিকায় নেই, সব আইনি বিকল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এখনই বিদেশি ঘোষণা করা যাবে না। তালিকায় বাদ পড়া প্রতিটি ব্যক্তিই বিদেশি ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবেন। এর জন্য আবেদনের সময়সীমা ৬০ থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে। এনআরসি নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন আসামের কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব