২৭ মে, ২০২০ ১৬:৪৫

আম্ফানে ধ্বংসস্তুপ কলকাতার কলেজ স্ট্রীট বই বাজার!

কলকাতা প্রতিনিধি:

আম্ফানে ধ্বংসস্তুপ কলকাতার কলেজ স্ট্রীট বই বাজার!

বিধান সরণীর ট্রাম লাইন, মহাত্মা গান্ধীসহ কলেজ স্ট্রীট বই পাড়ার বহু ছোট-বড় রাস্তায় সারি সারি বই রোদে শোকানো হচ্ছে। কোনোটা চাপা পড়ে আছে ভেঙে পড়া গাছের ডালের তলায়, কোনটা আবার রাস্তার পাশেই আবর্জনায় স্থান পেয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এই দৃশ্য সামনে এসেছে ভারতের বৃহত্তম বইবাজার কলেজ স্ট্রীট বই পাড়ার। দিন কয়েক আগে ওই সব এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় পানিতে রাশি রাশি বই ভেসে যাওয়ার দৃশ্যও ঠিক একইভাবে ভাইরাল হয়েছিল। 

লকডাউনের কারণে বন্ধ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্ধ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও। ফলে ব্যবসা তলানিতে বই বিক্রেতাদের। তারওপর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে কলেজ স্ট্রীটের এই ‘বই পাড়া’। 

গত বুধবার কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে আছড়ে পড়ে আম্ফান। ঝড়ের সাথে ছিল প্রবল বর্ষণ। ঝড়ের দাপটে অনেক অস্থায়ী বইয়ের স্টল যেমন ভেঙে পড়ে, তেমনি বহু বইয়ের দোকানে পানি ঢুকে যায়। কলেজ স্ট্রীটের রাস্তাতেই ভাসতে থাকে নামী-দামী বই। রাজ্যজুড়ে মৃত্যু হয় ৮৬ জনের। 
এমন অবস্থায় গত কয়েকদিন ধরেই বই বিক্রেতারা অনেকেই দোকান খুলে ভিজে যাওয়া বই যতটা সম্ভব একটু উঁচু যায়গায় ফেলে শোকাতে থাকেন। যদিও লকডাউনের কারণে যেসব দোকানের মালিকরা এখনও তাদের দোকান খুলতে পারেন নি তাদের অনেকেরই দোকানের মেঝেতে পড়েই নষ্ট হচ্ছে বই। 
কলকাতার প্রাচীন প্রকাশনা সংস্থা দেব সাহিত্য কুঠীরের তরফে জানানো হয়েছে ‘দোকানের সাটারের তলা দিয়ে পানি ঢুকেছে এবং কয়েক হাজার মুদ্রিত পৃষ্ঠা বাঁধানোর জন্য তৈরি করা ছিল, কিন্তু সেগুলো সব পানিতে নষ্ট হয়েছে। এছাড়াও বহু ছাপানো বইও পানির তলায় চলে গেছে।’ 

সেকেন্ড হ্যান্ড বই বিক্রিতে এশিয়ার বৃহত্তম বইয়ের বাজার হল কলকাতার কলেজ স্ট্রীট’এর বই পাড়া। এখানে পুরোনো বইয়ের দোকানগুলোর প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি দোকানের মালিক মুসলিম। লকডাউনে বন্ধ থাকার পর দোকানে পানি ঢোকার খবর পেয়ে হুগলীর জঙ্গিপাড়া থেকে কলেজ স্ট্রীটে চলে আসেন মহম্মদ কাশেম। তিনি জানান ‘২৩ মার্চের পর গত মঙ্গলবার প্রথম দোকান খোলা হয় কিন্তু আম্ফান আমার সব কেড়ে নিল।’  

পাবলিশার্স এন্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চ্যটার্জি জানান ‘আমাদের জগৎ পুরোপুরি ভাবে বিপর্যস্ত। প্রথমে করোনা ভাইরাসের কারণে দুই মাস ব্যবসা বন্ধ, তার ওপর ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। বহু বন্ধ দোকানে হাজার হাজার বই নষ্ট হয়ে গেছে।’ 

বই বিক্রেতাদের আর্থিক সহায়তার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াতেও সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ বই বিক্রেতাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চলতে থাকবে বলেও জানানো হয়েছে। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর