বিহারে বিধানসভার নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে। বুধবারের সকালটা বিহারের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের হলেও বেলা গড়াতেই জোর টক্কর দিতে থাকে জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) প্রধান তথা রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট।
অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে রাজ্যটির ২৪৩ টি বিধানসভার আসনে তিন দফার ভোট গ্রহণের পর মঙ্গলবার ছিল তার গণনা। কঠোর নিরাপত্তা ও কোভিড স্বাস্থ্য বিধি মেনেই সকাল ৮টায় শুরু হয় ভোট গণনা। গণনা শুরু হওয়ার পরই একাধিক আসনে মহাজোটের প্রার্থীদের এগিয়ে আসার খবর আসতে থাকে। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে চতুর্থবারের মতো বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে আর বোধহয় বসা হল না নীতিশের। তার পরিবর্তে বিহারের মসনদে বসতে চলেছেন আরজেডি নেতা ও বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের পুত্র তেজস্বী যাদব। পাটনায় তার বাড়ির সামনে দলীয় সমর্থকদের জমায়েতও শুরু হয়ে যায়, শুরু হয়ে যায় আবির খেলা ও মিষ্টি মুখের পালা।
এরপর বেলা বাড়তেই পরিস্থিতিক বদলাতে থাকে। ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকে ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে রাজ্যের নির্বাচনের গণনা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে গভীর রাত হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪৩ টি আসনের মধ্যে (ম্যাজিক ফিগার ১২২ টি) এনডিএ জোট এগিয়ে আছে ১১৪ টি আসনে, ইতিমধ্যেই ১০ টি আসনে তারা জয় পেয়েছে। অন্যদিকে ১০৬ আসনে এগিয়ে আছে মহাজোটের প্রার্থীরা, জয় পেয়েছে ৫ টি আসনে। অন্যরা ৭ টি আসনে এগিয়ে আছে এবং একটি মাত্র তারা জয়ের মুখ দেখেছে।
আর তাতেই খুশির হাওয়া রাজ্যের শাসক শিবিরে। রাজ্য জুড়ে মেতেছে বিজেপি ও জেডিইউ কর্মী-সমর্থকরা। পাটনায় জেডিইউ কার্যালয়ের সামনে ভিড় জমান দলের কর্মী-সমর্থকরা। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপি কর্মীরা উৎসবে মেতে ওঠেন।
তবে এই নির্বাচনে বিহারে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে উঠে আসতে পারে বিজেপি। কারণ ৭৫ টি আসনে এগিয়ে আছে গেরুয়া শিবির, ৭২ টি আসনে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হতে পারে আরজেডি, ৪১ আসনে এগিয়ে থেকে তৃতীয় স্থানে আছে জেডিইউ এবং ২০ আসনে এগিয়ে থেকে চতুর্থ স্থানে আছে মহাজোটের অন্যতম শরিক কংগ্রেস।
যদিও সরকার গঠনের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী আরজেডি। দলের তরফে এক ট্যুইটবার্তায় তারা জানিয়েছে বিহারে তারাই সরকার গড়বে। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের দাবি বিহারবাসী পরিবর্তনের জন্য এবারের ভোট দিয়েছেন। গণনা প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলের সকল প্রার্থী ও কাউন্টিং এজেন্টদের গণনা কেন্দ্রেই থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল