প্রতি বছর কোরবানির ঈদ সামনে রেখে মসলার বাজারে দেখা দেয় অস্থিরতা। এবার রাজধানীর অন্যতম মসলার পাইকারি বাজার চকবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেল, বাজার এখনো বেশ স্থিতিশীল। কোরবানির ঈদ ঘিরে ২০ ধরনের মসলার কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে ১৮টির দাম গত বছরের তুলনায় কম। ব্যতিক্রম এলাচ- যার দাম এখনো আকাশছোঁয়া। বাংলাদেশ গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অমর কান্তি দাশ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এবার সব ধরনের মসলার দাম মোটামুটি কম। গুয়েতেমালা থেকে আনা এলাচের উৎপাদন কম হওয়ায় সরবরাহ কমেছে। তবে অন্যান্য মসলা পর্যাপ্ত এসেছে। ভারত থেকেও নিয়মিত আসছে।
পুরান ঢাকার চকবাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারিতে ভারতীয় জিরা ৬২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, গত বছর ঈদের আগে দাম ছিল ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা কেজি। দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৪৯০ টাকা, গত বছর ঈদের আগে যেটার দাম ছিল ৫৫০ টাকা। জয়ফল ৭২০ টাকা কেজি দরে পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে, গত বছর ঈদে এই মসলার দাম ৫০ টাকা কম ছিল বলে জানিয়েছেন ব্যবয়ায়ীরা। অন্যদিকে লবঙ্গ ১ হাজার ৩৩০ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে, যেটা গত বছর ঈদে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এ ছাড়া বাজারে পাইকারিতে ধনিয়া প্রতি কেজি ১৯০, তেজপাতা ২২০ এবং সরিষা ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরায় দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৬০, চীনা রসুন ২০০ থেকে ২৪০, শুকনো মরিচ (দেশি) ২৮০ থেকে ৩০০ এবং আমদানি করা ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা দরে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। আদা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ এবং হলুদ ৩২০ টাকায়।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এলাচের সরবরাহ সংকটের কারণে এ পণ্যটির দাম বেশি। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি এলাচের দাম দেখা গেছে ৫ হাজার থেকে ৫ হাজার ১০০ টাকা, যা গত বছরে ঈদের আগে ছিল ৪ হাজার টাকার কাছাকাছি। এক বছরের ব্যবধানে এলাচের কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে প্রায় ১ হাজার টাকা। এলাচের দাম কেন বাড়ছে, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন চকবাজারের এক ব্যবসায়ী। তিনি জানান, কেজিপ্রতি এলাচ আমদানিতে খরচ পড়ে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। অন্যান্য খরচ যুক্ত হয়ে পাইকারি দাম গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৬ হাজারে। তাই নতুন এলাচের দাম বেশি হওয়ায় গত বছরের মজুদ করা এলাচ এখন বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। তার পরও দাম পড়ছে প্রায় ৫ হাজার টাকা কেজি।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মসলা বাজার থেকেও আসছে একই সুর। সেখানে ভালোমানের ছোট এলাচ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬০০ থেকে ৪ হাজার ৮০০ টাকায়। এ ছাড়া জিরা ৬০০ থেকে ৬৫০, লবঙ্গ ১ হাজার ২৫০, দারুচিনি ৩৭০ থেকে ৪৭০, গোলমরিচ ১ হাজার ১৮০ ও জয়ত্রি ২ হাজার ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাতুনগঞ্জের পাইকারি মসলা বিক্রেতা রাইসুল ইসলাম জানান, আমাদের কাছে যা মজুদ ছিল, প্রায় সবই বিক্রি হয়েছে। এবার আমরা অনেকটাই কম লাভে দিচ্ছি।