অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে বলেছেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। চলমান এ যুদ্ধ রাশিয়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানির অর্থ পরিশোধ নিয়েও জটিলতা দেখা দিতে পারে। তেল-গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে খাদ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল এবং আন্তর্জাতিক পরিবহন খরচ বেড়ে দেশে মূল্যস্ফীতি অনুভূত হতে পারে। তবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, এ সংকটে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়লেও দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাকে এ মুহূর্তে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলবে না।’
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজ সোমবার জাতীয় সংসদের ১৭তম অধিবেশনে টেবিলে উপস্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সফিউল ইসলামের (ঢাকা-১০) প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘ইউক্রেনে শুরু হওয়া রাশিয়ার সামরিক অভিযান এবং এর পাশাপাশি রাশিয়া ও তার মিত্র দেশ বেলারুশের ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এ সংকটে জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠেছে। এই সামরিক সংকটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে অভিঘাত পড়তে যাচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদে এর ফলাফল কী হবে, তা নির্ভর করবে এ যুদ্ধ ও তার ফলে উদ্ভূত সংকট কতটা প্রলম্বিত হবে তার ওপর।’
রেমিট্যান্স এসেছে ১৩ হাজার ৪৪০ মার্কিন ডলার:
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত (আট মাসে) বিদেশ হতে ১৩ হাজার ৪৪০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
২ হাজার ৮৫৪ মার্কিন ডলার ঋণ ছাড়:
সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসানের (ঢাকা-১৮) লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রথম আট মাসে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি হিসেবে ২ হাজার ১৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এসময়ে বর্তমান ও আগের ঋণ সহায়তা চুক্তি হতে ২ হাজার ৮৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড় করা হয়েছে।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ:
জাতীয় পার্টির এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার (ঢাকা-৪) লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদকে জানান, বিগত এক দশকে বাংলাদেশের ক্রমাগত উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারা কোভিড-১৯ এর প্রভাবে সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও ২০২০-২১ অর্থবছরে করোনা মহামারির কারণে তা কমে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশে নামে। তবে করোনা প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব, দূরদর্শিতা ও নিরলস কর্মতৎপরতায় দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তেমন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েনি। বরং মহামারির অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ
