স্বজন হারানোর যন্ত্রণা কি শুধুই মানুষের? বিয়োগব্যথা কি শুধু আমাদেরই কাঁদায়, বিষণ্ণ করে তোলে? তা যে নয়, সে বিষয়ে সাক্ষী থাকলেন তামিলনাড়ুর প্রত্যন্ত এক গ্রামের মানুষ। তারা দেখলেন, মা-হারা সন্তানের অশ্রুসজল কান্না। হতে পারে সে একরত্তি বানরছানা, তো কী হল? অনুভূতি তো অভিন্নই!
এলান্থুররের কাছেই তামিলনাড়ু-কর্নাটক ন্যাশনাল হাইওয়ের উপর রাস্তা পেরোনের সময় একটি গাড়ির ধাক্কা মারা যায় ওই বাঁদরছানার মা। দুরন্ত, বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় কয়েক হাত দূরে ছিটকে পড়ে মা বাঁদরটি আর মাটি ছেড়ে উঠতে পারেনি!
বাচ্চাটি তার মধ্যেই বার কতক মাকে জাগানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেও পারেনি ঘুম ভাঙাতে। বুকের কাছে কান পেতে মায়ের হৃদস্পন্দন শোনারও চেষ্টা করে। মা যে আর বেঁচে নেই, ততক্ষণে সে জেনে ফেলেছে।
হলই বা বানরছানা, চোখের সামনে মায়ের এমন মর্মান্তিক মৃত্য দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারেনি সে। চোখ ভেসে যায় জলে। থেকে থেকে জাপটে ধরে মাকে। পুলিশ ও বনদফতরের লোকজন আসার আগ পর্যন্ত মাকে আগলেই রাস্তার ধারে বসেছিল সে। পরে কোনোক্রমে মৃত মায়ের কাছ থেকে আলাদা করা হয় বাচ্চাটিকে। সেখান থেকে পুলিশ ও বনদফতরের এক কর্মকর্তার উপস্থিতিতে গ্রামবাসীরা মৃত মা বাঁদরটিকে অদূরেই একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে সমাধিস্থ করেন। মায়ের শেষকৃত্য পর্যন্ত সেখানেই, একটি গাছের ডালে বসেছিল মা-হারা সেই শিশুসন্তান।
বিডি প্রতিদিন/১১ মার্চ ২০১৭/এনায়েত করিম