বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা
দৃষ্টি এবার ল্যাটিন আমেরিকায়

রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন গন্তব্য

রুহুল আমিন রাসেল

রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন গন্তব্য

এবার ল্যাটিন আমেরিকার ২২ দেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণে দৃষ্টি দিয়েছে সরকার। রপ্তানি বাণিজ্যে আকাশচুম্বী সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল, চিলি, মেক্সিকো, কলম্বিয়া, পানামা ও পেরুতে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানিতে ব্রাজিলকে সর্ববৃৎ সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। বিদ্যমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাধা দূর হলে ল্যাটিন আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্কের সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা। তথ্য সংশ্লিষ্ট সূত্রের। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি— বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ব্রাজিলকে কেন্দ্র করে ল্যাটিন আমেরিকার ২২ দেশে আমাদের রপ্তানির বিশাল বাজার হতে পারে। তবে কয়েকটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। এরপরও চিলি-আর্জেন্টিনা ও মেক্সিকোতে তৈরি পোশাক রপ্তানি অনেক সহজতর হতে পারে, যদি আমাদের ব্রাজিল দূতাবাস সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। আর তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও ওষুধ রপ্তানির বিশাল সম্ভাবনা দেখছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ—ডিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম। জানা গেছে, ২২ দেশে বাণিজ্য সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ব্রাজিলকে প্রবেশ পথ হিসেবে মনে করছে সরকার। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১২ সালে ব্রাজিলে ফের বাংলাদেশ দূতাবাস কার্যক্রম চালু হয়। এরপর ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোতে রপ্তানি বাড়ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২২টি দেশে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ৪৫৪ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। সরকার মনে করছে, বাংলাদেশের পাট, তৈরি পোশাক পণ্য, চামড়াজাত পণ্য ও ওষুধের বিশাল বাজার হতে পারে ব্রাজিলকেন্দ্রিক ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো। বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন—এফবিসিসিআই বাণিজ্য বাড়াতে বেশকিছু সমস্যা চিহ্নিত করেছে, এগুলোর মধ্যে রয়েছে—বাংলাদেশের সঙ্গে ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর বিদ্যমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাধা দূর করা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান। বাংলাদেশি পণ্য বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সহজ করতে অ্যাক্রিডেশন বোর্ডকে ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর কাছে গ্রহণযোগ্য করে গড়ে তোলা।

ওই দেশগুলোতে দূতাবাস ও বিজনেস সেন্টার স্থাপন করে পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বিনিময় করা। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ভিসা প্রাপ্তি সহজীকরণে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া। এফবিসিসি-আইর সঙ্গে ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর বাণিজ্য সংগঠন সমূহের সমঝোতা স্মারক চুক্তি এবং বাণিজ্য ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সফর বিনিময় করা। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং— সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর অর্থনীতির অবস্থা কিছুটা দুর্বল হলেও বাংলাদেশের তুলনায় ভালো। সে বিবেচনায় পণ্য বহুমুখীকরণ ও বাজার সম্প্রসারণের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে এগোতে হবে। এক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা আদায়ে সরকারকে এগিয়ে যেতে হবে ওই দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির দিকে।

সর্বশেষ খবর