নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বঙ্গভবনে চলছে সাজ সাজ রব। ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সাড়ে সাতশ চেয়ার দিয়ে সাজানো হয়েছে দরবার হল। পাশের মাঠেই করা হয়েছে অতিথিদের জন্য চা চক্রের ব্যবস্থা। বঙ্গভবনের আশপাশের এলাকা ঢেকে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে। আজ রবিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ পড়াবেন।
জানা গেছে, শপথ অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রধান দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সকাল থেকেই শপথ নিতে যাওয়া বিভিন্ন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের ফোনে দাওয়াত দিচ্ছেন। তিনি জানান, ইতোমধ্যে শপথের প্রস্তুতি শেষ করে ফেলেছেন। অতিথিদের বসার আসনে নামের ট্যাগ লাগানো হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ কূটনীতিক, ব্যবসায়ী নেতা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, মুক্তিযোদ্ধাসহ এক হাজারের মতো অতিথিকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সামনে ৩৫টি গাড়ি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এ ৩৫টি গাড়ি যাবে নতুন করে যাঁরা মন্ত্রী হচ্ছেন তাঁদের কাছে।
এই শপথের মধ্যে দিয়ে তৃতীয়বারের মতো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে প্রধানমন্ত্রী এবং পর্যায়ক্রমে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীরা শপথ নেবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার সদস্যদের দপ্তর বণ্টন রবিবারই হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর উপদষ্টোদের দায়িত্বও এদিনই বণ্টন করবেন সরকারপ্রধান।
নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিলেই গত নভেম্বরে গঠিত ২৯ সদস্যের নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভার দায়িত্ব শেষ হবে। যারা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় উপদষ্টো ছিলেন, মন্ত্রিসভার শপথের আগেই তাদের অব্যহতি দেওয়া হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী নতুন করে উপদষ্টো নিয়োগ দেবেন।
দশম সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদের নামের গেজেট জারি হয়েছে। তার দলের সদস্যরা মন্ত্রিসভাতেও থাকবেন- এমন কথাও শোনা যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। শনিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি সেই তালিকা অনুমোদন করেন। মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের শপথের আমন্ত্রণ জানিয়ে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে ফোন করা হচ্ছে শনিবার থেকেই।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী মিলিয়ে এবার মনি্ত্রসভার আকার ৫০ জনের মধ্যে সীমিত থাকতে পারে। তবে মন্ত্রী যে কয়জনই থাকুক এবার দু'একজন উপমন্ত্রী থাকবেন বলে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
বিএনপি ও তাদের শরিকদের বর্জনের মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের ভোট হয়। এতে ২৩১টি আসনে জয়ী হয়ে ফের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় আওয়ামী লীগ।
দশম সংসদ নির্বাচনে ৩০০ সংসদীয় আসনে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ৫ জানুয়ারি ভোটে নির্বাচিত হন ১৩৯ জন। বাকি আটটি আসনে পুনর্ভোট হবে ১৬ জানুয়ারি। ২৯০ আসনের গেজেট প্রকাশের পর গত বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণ করেন দশম সংসদের সদস্যরা।