রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের হত্যা মামলার চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জাহাঙ্গীরের আটকের বৈধতার বিরুদ্ধে করা রিট খারিজ করেছে আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গঠিত এই আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সমরেন্দ্র নাথ গোস্বামী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, তাহেরের হত্যা ৭১’র বর্বরতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এদিকে তাহেরের পরিবার জানিয়েছে তারা দ্রুত রায় কার্যকর দেখতে চায়।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা জানান, তারা পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করে ফাঁসির রায় কার্যকরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা চলছে।
কে এই জাহাঙ্গীর?
অধ্যাপক তাহের বিশ্ববিদ্যালয় কোয়ার্টারে একা থাকতেন। এই বাড়িতে কাজ করতেন জাহাঙ্গীর আলম। তার বাড়ি নগরীর মতিহার থানার ২৯ নং ওয়ার্ডের ১২২ নং মহল্লার বাসিন্দা। তার বাবা আজিম উদ্দিন মুন্সিও এ মামলার আসামি ছিলেন। তবে তৎকালিন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী এবং তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। আজিম উদ্দিনের ছয় ছেলে। এ মামলায় জাহাঙ্গীরের ফাঁসির দণ্ডাদেশ ও আরেক ছেলে আব্দুস সালামের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সেদিন যা ঘটেছিল
২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাড়া শিক্ষক কোয়ার্টারের ম্যানহোলে পাওয়া যায় অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ। ৩ ফেব্রুয়ারি নিহত অধ্যাপক তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহীর মতিহার থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়ের জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয় বলে জানা গেছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, অধ্যাপক তাহেরকে পাওয়া না গেলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির ম্যানহলে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তিনি ওই বাড়িতে একাই থাকতেন। তাঁর দেখাশোনা করতেন জাহাঙ্গীর। মৃত্যুর ওই রাতেই ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে ফিরেছিলেন এ অধ্যাপক।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন