বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

অনলাইনে সহজেই আর এস খতিয়ান পাবেন মানুষ : ভূমিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, অনলাইনে আর এস খতিয়ান প্রাপ্তির ফলে জনগণের ভোগান্তি অনেকাংশে হ্রাস পাবে। সেবাগ্রহীতাগণ খুব সহজেই এখন নির্দিষ্ট ফির মাধ্যমে আর এস খতিয়ান পেতে পারেন। অনলাইন পদ্ধতির কারণে কমে যাবে সামাজিক দ্বন্দ্ব, সংঘাত, মামলার ভোগান্তি এবং মধ্য-স্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য। একই সঙ্গে মানুষের সময়, খরচ এবং যাতায়াত কমে যাবে। নিশ্চিত হবে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা।

‘হাতের মুঠোয় খতিয়ান’ এই স্লোগান নিয়ে গতকাল ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত দেশব্যাপী আর এস খতিয়ান অনলাইনে অবমুক্তকরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করার সময় এসব কথা বলেন ভূমিমন্ত্রী।

ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালক তসলীমুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ভূমি সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটোয়ারী। অনুষ্ঠানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সেবাগ্রহীতাগণের সুবিধার্থে অভিযোগ কেন্দ্র গঠনের জন্য হটলাইন, সরকারের সঙ্গে ভূমি সম্পর্কিত বিভিন্ন লেনদেনের জন্য ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালুকরণের জন্য একটি পেমেন্ট গেটওয়ে স্থাপন, অনাবাসী বাংলাদেশিদের সেবা দেওয়ার জন্য একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু এবং ল্যান্ড ব্যাংক করার বিষয়গুলো প্রক্রিয়াধীন। এগুলো মূলত পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ইন্টিগ্রেটেড অটোমেশনের ভিতর নেওয়ার পর্যায়ক্রমিক ধাপ। খুব শিগগির পুরো দেশকে ই-মিউটেশনের আওতায় আনা হবে।

মন্ত্রী বলেন, দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে ভূমি ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব। সুশাসন নিশ্চিত করতে পারলে আমরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব। ভূমি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন যেন টেকসই হয় সেজন্য আমরা বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর আমি ৯০ দিনের প্রাথমিক কর্মসূচি গ্রহণ করি। মেয়াদের প্রথম দেড় বছর ‘স্বল্প মেয়াদি’, পরবর্তী দেড় বছর ‘মধ্যম মেয়াদি’ এবং শেষ দুই বছরকে ‘দীর্ঘ মেয়াদি’ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পুরো পাঁচ বছরের কর্মপরিকল্পনার ‘ডেডলাইন’ সাজিয়েছি। ভূমি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে দেশব্যাপী শিগগিরই ভূমি সপ্তাহ এবং ভূমি উন্নয়ন মেলা পালন করা হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতরগুলোতে কর্মরত গণকর্মচারীবৃন্দ সম্পত্তির হিসাব জমা দিয়েছেন। জেলা প্রশাসনে কর্মরতরা নিজ নিজ কালেক্টরেট অফিসে সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন। খুব শিগগির আপনারা তা জানবেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় এখন আগের অবস্থানে নেই। এখন কর্মচারীরা অনেক ভালোভাবে কাজ করছে। উপরের দিকে দুর্নীতি কমে এসেছে। উপরের দিকে দুর্নীতি কমে এলে নিচের দিকেও দুর্নীতি কমে আসবে।

তিনি বলেন, আমি টিমে বিশ্বাসী। সবাই মিলে ভালোভাবে কাজ করলে অবশ্যই ভূমি সেক্টরের বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত সমাধান করা সম্ভব। মুজিববর্ষ শুরু হওয়ার আগেই ভূমি মন্ত্রণালয়কে একটি পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। ভূমি অধিকার সম্পর্কিত সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মন্ত্রী মিডিয়া কর্মীদের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কাজের স্বার্থে সবার জন্য আমার দরজা খোলা।

অনুষ্ঠানে প্রায় ৩২ হাজার জরিপকৃত মৌজার এক কোটি ৪৬ লাখ আর এস খতিয়ান জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেন মন্ত্রী।  বাকিগুলোও পর্যায়ক্রমে উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর