কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের প্রভাবশালী সদস্য এবং নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত ডেমক্র্যাট কংগ্রেসওম্যান ক্যারোলিন বি. ম্যালোনি আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশের দীর্ঘদিনের দাবির যথার্থতা সমর্থন করেছেন। তিনি উগ্র-ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের লড়াই এবং বর্তমান গণতান্ত্রিক পরিবেশে নারীর ক্ষমতায়নের প্রশংসা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন নিউইর্য়ক সিটির ম্যানহাটানে কংগ্রেসওম্যানের ডিস্ট্রিক্ট অফিসে ১০ আগস্ট ম্যালোনির সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন। ম্যালোনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। বর্তমানে যখন দেশটি সন্ত্রাসবাদ এবং ধর্মীয় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তখন কেন তারা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে না?’ তিনি আশ্বাস দেন কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের অন্য সদস্যদের সাথে একযোগে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের কাছে বিষয়টি তুলে ধরবেন যাতে বাংলাদেশ বিশেষ বাণিজ্যিক সুবিধা পেতে পারে।
প্রায় ৩০ মিনিট স্থায়ী বৈঠকে রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধর্মীয় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, নারীর ক্ষমতায়ন, দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বহুমুখী সহযোগিতাসহ বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ম্যালোনিকে অবহিত করেন। দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার শামিম আহমদ এবং কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) নাঈম আহমেদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন তাকে জানান, বাংলাদেশে এখন শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে এবং দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ ক্রমাš^য়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত।
জিয়াউদ্দিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানী পণ্য বিশেষ বাণিজ্যিক সুবিধা পাওয়ার যোগ্যতা রাখে যা চূড়ান্তভাবে নারীর ক্ষমতায়নে অবদান রাখবে। রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, বর্তমানে ঢাকা এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রসারিত এবং গভীর হচ্ছে এবং পার্টনারশিপ ডায়ালগ, সিকিউরিটি ডায়ালগ এবং টিকফা বাস্তবায়নে দু'দেশের সম্পর্ক আরো প্রসারিত করছে।
কংগ্রেসওম্যান ম্যালোনি জানতে চান কেন বাংলাদেশ সরকার এই সকল ধর্মীয় উগ্রবাদী দলগুলোকে পরিহার করছে না? উত্তরে রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন বলেন যে, সরকার এই ব্যাপারে সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা করছে।
রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সংগঠিত ইতিহাসের কলঙ্কজনক হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কংগ্রেসওম্যান ম্যালোনিকে অবহিত করেন। তিনি বলেন, ওই কালরাতে বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করা হয়। কংগ্রেসওম্যান ম্যালোনি এই মর্মান্তিক ঘটনা শোনার পর তার মন্তব্যে বলেন, ‘‘কি মর্মান্তিক ঘটনা’’। তিনি আসন্ন জাতিসংঘ অধিবেশন চলাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।
কংগ্রেসওম্যান ম্যালোনি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ১১ আগসবট, ২০১৫/ রশিদা