আলাপ আলোচনার মাধ্যমে চলমান সহিংসতার অবসান ঘটিয়ে দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার দাবি করেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে শনিবার সকালে দেশে ফিরে সমবেত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেয়ার সময় এ আহ্বান জানান।
আন্দোলনের সময় তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তরা হামলা করেছিল দাবি করে সেদিনের ভয়াবহ হামলার কথা স্মরণ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘‘আমরা যখন বাড়ি থেকে বের হই তখন রাজপথে আন্দোলনের নামে খুনিরা আমার ও আমার কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। সেখানে জুয়েল মোল্লাকে তারা হত্যা করেছে, আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে একটি বাড়িতে আড়াই ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। তারা ভেবেছিল আমি মারা গেছি, সর্বশেষ তারা বিভিন্ন হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় আমি সেখান থেকে উদ্ধার হই এবং চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাই।’’
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমরা চাই আলোচনার মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু সমাধান হোক। আমাদের সন্তানরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাক। আর কারো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়ে বেশি অন্য কেউ দেশপ্রেমিক হতে পারে না।’’
এর আগে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে দুই সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে শনিবার সকাল ৮টার দিকে বিমানযোগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন জাহাঙ্গীর আলম। এসময় বিমানবন্দরে আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন, মো. মাজহারুল আলম, প্যানেল মেয়র মাসুদুল হাসান বিল্লালসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। তার আগমন উপলক্ষে ভোর থেকে দলে দলে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ জড়ো হন বিমানবন্দর এলাকায়। তিনি বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত তার সহযোগী জুয়েল মোল্লার কবর জিয়ারত করেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের খোঁজ-খবর নেন। পরে গাড়ি বহর নিয়ে ছয়দানায় তার নিজ বাস ভবনে আসেন জাহাঙ্গীর আলম। এসময় সেখানে অবস্থানরত হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তাকে স্বাগত জানান।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জায়েদা খাতুনের বড় ছেলে সাবেক সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে উত্তরায় হামলা করে একদল দুর্বৃত্ত। তাদের হামলায় জাহাঙ্গীর আলম গুরুতর আহত হন, মারা যান তার সঙ্গে থাকা জুয়েল মোল্লা নামে এক সহযোগী। মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর আলমকে পরদিন সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ