বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের অব্যাহত বিক্ষোভের কারণে নিয়োগ পাওয়ার এক সপ্তাহ পরও রাজশাহী কলেজে যোগ দিতে পারেননি নতুন অধ্যক্ষ আনারুল হক প্রামাণিক। শিক্ষার্থীরা তাঁর নিয়োগ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন। তারা যে কোনো মূল্যে আনারুল হককে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন। কলেজসূত্র জানান, ৮ সেপ্টেম্বর রাজশাহী সরকারি শহীদ বুদ্ধিজীবী কলেজের অধ্যক্ষ আনারুল হককে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
এ খবর কলেজে জানাজানি হলে ৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন শুরু করেন। লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, অধ্যাপক আনারুল হক প্রামাণিক আওয়ামী লীগ সরকারের আশীর্বাদে ইতঃপূর্বে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করেন। তখন আনারুল হকসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা মিলে আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন পর্যন্ত গড়ায়। শেষ পর্যন্ত আত্মসাতের অর্থ বোর্ড তহবিলে ফেরত দিয়ে তিনি দুদকের অভিযোগ থেকে মুক্ত হন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত সরকারের রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির কারণে দুদক তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেও তাঁকে অব্যাহতি দিতে বাধ্য হয়। আনারুল হক আওয়ামী লীগের দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যই দলের সুপারিশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পদ বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন। শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থেকে শুরু করে রাজশাহীর শহীদ বুদ্ধিজীবী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের পদও তিনি দখল করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুুর রহিম বলেন, ‘স্বৈরাচার শাসকের দালাল এবং প্রমাণিত দুর্নীতিবাজকে আমরা দেশসেরা রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে মেনে নিতে পারি না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তাঁকে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে; তিনি যেন কলেজে না আসতে পারেন।’
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রাজশাহী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুল খালেক ১২ আগস্ট পদত্যাগ করে নিজের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক পদে যোগ দেন। এর প্রায় এক মাস পর আনারুল হককে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়।