প্রজ্ঞাপনের অপেক্ষায় রয়েছেন রাষ্ট্র সংস্কারে ঘোষিত কমিটির প্রধানেরা। কোন কমিটিতে কারা থাকবেন, তা নিশ্চিত হলেই পুরোদমে কাজ শুরু করবে রাষ্ট্র সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত ছয় কমিটি। এদিকে এ কমিটির আকার আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে। এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছয়টি কমিশনপ্রধানের নাম ঘোষণা করেন। এ কমিটিতে কারা থাকবেন তা চূড়ান্ত হয়নি এখনো। আজ ১ অক্টোবর কমিটির কাজ পুরোদমে শুরু করার কথা। আগামী ৩১ ডিসেম্বর কমিশন রিপোর্ট দেবে। এদিকে রাষ্ট্র সংস্কারে কমিটির আকার বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের। নতুন করে গণমাধ্যম, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকারব্যবস্থা সংস্কার গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কার কমিশনপ্রধানের নাম ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্র সংকার কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা প্রজ্ঞাপনের অপেক্ষায় আছেন। কমিশনে কারা থাকবেন, তা দেখে নিজেরা পুরোদমে কাজ শেষ করবেন। এ প্রসঙ্গে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কমিশন নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন জারি না হলেও এককভাবে কাজ চলছে। আশা করি দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি হবে। আমরা পুরোদমে কাজ শুরু করব।’
সূত্রমতে, সংস্কার কমিশন রিপোর্ট দেওয়ার পর ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করবে সরকার। চূড়ান্ত পর্যায়ে শিক্ষার্থী, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে তিন থেকে সাত দিনব্যাপী একটি পরামর্শসভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এতে এ রূপরেখা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, এর একটি ধারণাও দেওয়া থাকবে।
সরকারের ঘোষিত ছয় সংস্কার কমিটির প্রধানরা হলেন-নির্বাচন সংস্কার কমিশনে ড. বদিউল আলম মজুমদার, দুদকে ড. ইফতেখারুজ্জামান, বিচার বিভাগে বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, পুলিশ কমিশনে সফররাজ হোসেন, জনপ্রশাসনে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সংবিধান সংস্কার কমিশনে ড. আলী রীয়াজ। আরও চারটি কমিশন গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রজ্ঞাপন হলেই কমিটির প্রধানরা কাজ করবেন বলে কথা বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, ছয়টি কমিশনের সঙ্গে ১৯ সেপ্টেম্বর বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে অংশ নেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফররাজ হোসেন, বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। বিদেশে থাকায় এ বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কমিশনের অন্য সদস্যদের নাম চূড়ান্ত হলে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি রূপরেখা তৈরি করতে পারব। আশা করছি সবাই মিলে দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারব।’