দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় কচু চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে চাষিরা। গত বছরের চেয়ে ভালো ফলন ও দামে এবার খুশি তারা। তবে বিরামপুরে বেশি চাষ হয়েছে বিলাসী জাতের কচু। এ জাতীয় কচু চাষে ভালো ফলনে অনেক কৃষক আগ্রহী হয়েছেন। এ উপজেলার মুকুন্দপুর, কেশবপুর, ফকিরপাড়া, হরেকৃষ্ণপুর, ভবানিপুর, মাহমুদপুর, প্রস্তমপুর, সারাঙ্গপুর, চকবসন্তপুর, মির্জাপুর ও হাবিবপুর গ্রামে মাঠে সবচেয়ে বেশি কচু চাষ হয়েছে।
বিরামপুর বাজারে দেখা যায়, চাষিরা ভ্যানে করে জমি থেকে তোলা বিভিন্ন সবজি বাজারে আনছেন। বাজারে প্রতিমণ কচু বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ১৩৫০-১৪৫০ টাকা পর্যন্ত। এসব কচু স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে করে চলে যাচ্ছে।
বিরামপুর কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় বিভিন্ন প্রজাতির ১৬০ হেক্টর জমিতে প্রায় ৮৫০ কৃষক কচু চাষ করেছেন। তবে বেশি চাষ হয়েছে বিলাসী জাতের কচু। প্রতি বিঘা জমিতে ৮০-১০০ মণ ফলন হয়। এতে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মণ উৎপাদন হয়েছে।
কৃষকদের দাবি, প্রতি বিঘা জমিতে প্রকারভেদে ৭০-৮৫ মণ ফলন হয়েছে। প্রতিবিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকার বীজ, পানি ৪ হাজার, নিড়ানি ৬ হাজার, বাঁধানো ৭ হাজার, সার ৬ হাজার, গোবর সার ২ হাজার, চাষ ১ হাজারসহ মোট ৩৬ হাজার টাকা। এ ছাড়া মাঠ থেকে ফলন তুলতে মণপ্রতি আরও ২০০ টাকা এবং পরিষ্কার করতে ১০০ টাকা খরচ হয়।
মাধবপাড়া গ্রামের কৃষক ইমরান আলী বলেন, এ বছর ৩ বিঘা জমিতে কচু চাষ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে ৭৫-৮০ মণ কচু চাষ হয়েছে। গত বছর অনাবৃষ্টির কারণে ফলন কম হলেও এবার ভালো হয়েছে। বর্তমানে ১ মণ কচু ১৪২০ টাকা দরে বিক্রি করেছি।
ভবানিপুর গ্রামের কচু চাষি আহসান কামাল বলেন, ১২ বছর ধরে কচু চাষ করছি। প্রতিবছর বিভিন্ন দুর্যোগে ফলন কম-বেশি হয়। এবার খুব ভালো ফলন। ২ বিঘা জমিতে ১৮০ মণ কচু হয়েছে। প্রতিমণ কচু ১৪০০ টাকা বিক্রি করেছি। খরচ বাদে ভালোই লাভ হয়েছে।
শ্রমিক আকবর হোসেন বলেন, প্রতিদিন জমি থেকে প্রায় ৫ মণ কচু ওঠানো যায়। এতে ১ হাজার টাকা মজুরি পাই। এলাকায় কচুর আবাদ বেশি হওয়ায় ভালো হয়েছে।
বিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কমল কৃষ্ণ রায় বলেন, বিরামপুরের উপজেলার মাটি বেলে- দোআঁশ মাটির মিশ্রণ আছে। এসব জমি কচু চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বিরামপুর এলাকায় কচু চাষ দিন দিন বাড়ছে। আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে ফলন কিছুটা কমবেশি হয়। কচু এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।