দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন অবসানের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজপথে নেমেছিল সর্বস্তরের মানুষ। যে কারণে গণ অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন পৌনে ১৬ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা ‘লৌহমানবী’ শেখ হাসিনা। এর আগে গত দেড় দশকে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি সর্বস্তরের সাধারণ মানুষকে সে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে না পারার কারণে। ছাত্র সমাজের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আপামর জনতা রাজপথে নামার অন্যতম প্রধান কারণ গত দুই বছর ধরে ক্রমাগতভাবে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি। এ মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ ছিল চাঁদাবাজি। ব্যবসায়ীদের মুনাফাখোরী মনোভাবও মূল্য বৃদ্ধিতে ইন্ধন জুগিয়েছে। আশার কথা, শিক্ষার্থী ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তদারকিতে বাজারে কমতে শুরু করেছে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম। দোকানে দোকানে শিক্ষার্থীরা টাঙিয়ে দিয়েছেন দামের তালিকা। চলছে তদারকি। এতে মাছ-মুরগিসহ কমেছে বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম। মুরগির দাম ব্রয়লারে কমেছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা আর সোনালিতে কমেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। সবজিতে কমেছে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা। অভিজ্ঞজনদের মতে, সবজি ব্যবসায়ীদের চাঁদা দিতে হতো প্রতিটি ক্ষেত্রে। কয়েকদিন ধরে তা দিতে হচ্ছে না তাদের। সেজন্য দাম কমছে। এভাবে সরকারের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে গেলে বাজার পরিস্থিতি ইতিবাচক থাকবে। গত কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীদের টিম বাজার তদারকি করছে। ব্যবসায়ীদের নিত্যপণ্যের দাম টাঙিয়ে রাখার জন্য বলেছে। সড়কে এবং দোকানে চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ায় কম দামে পণ্য বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে। আমরা এ কলামে বারবার বলেছি নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকা না থাকার ওপর সরকারের জনপ্রিয়তা নির্ভর করে। গণতন্ত্র শুধু নয়, দেশবাসীর কাছে নিত্যপণ্যের সহজপ্রাপ্যতাও অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের প্রত্যাশা, বাজার নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টা সফল হবে। চাঁদাবাজির অপসংস্কৃতির ইতি ঘটবে।