রহমান-শবনম
১৯৬০ সালে এহতেশাম পরিচালিত ‘রাজধানীর বুকে’ ছবিতে প্রথম জুটি বেঁধে অভিনয় করেন রহমান-শবনম। ছবিটি সুপার হিট হলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় রহমান-শবনম জুটি। রহমান-শবনম জুটি বাংলা ও উর্দু, দুই ভাষার ছবিতেই সমান দর্শকপ্রিয়তায় অভিনয় করে গেছেন। এ জুটির অন্যান্য সফল ছবির মধ্যে রয়েছে- হারানো দিন, চাহাত, দো সাথী, চলো মান গায়ে, তালাশ, চান্দা, দরশন, আমার সংসার প্রভৃতি।
রাজ্জাক-কবরী
১৯৬৭ সালে সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘আবির্ভাব’ চলচ্চিত্রে জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-কবরী। ছবিটি সুপার হিট হলে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি এ জুটিকে। তারা একসঙ্গে ৬০টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেন। এ জুটির অন্যতম ছবিগুলো হলো- ‘গুন্ডা’, ‘বেঈমান’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘রংবাজ’, ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘যে আগুনে পুড়ি’, ‘দ্বীপ নেভে নাই’, ‘দর্পচূর্ণ’, ‘আগুন্তক’, ‘কত যে মিনতি’, ‘অধিকার’, ‘কাঁচ কাটা হীরা’, ‘আমাদের সন্তান’, ‘উপহার’, ‘ময়নামতি’, ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’, ‘এতটুকু আশা’, ‘স্মৃতিটুকু থাক’, ‘ক খ গ ঘ ঙ’ প্রভৃতি।
আজিম-সুজাতা
১৯৬৫ সালে ‘রূপবান’ ছবির মাধ্যমে অভিনয় শুরু সুজাতার। আর ১৯৬৭ সালে সাইফুল মুলক বদিউজ্জামান ছবিতে নায়ক চরিত্রে অভিনয়ে অভিষেক আজিমের। সুজাতা ও আজিম একত্রে চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন- ‘চেনা অচেনা’, ‘টাকার খেলা’, ‘প্রতিনিধি’, ‘অর্পণ’, ‘রূপবানের রূপকথা’, ‘বদলা’, ‘রং বেরং’, ‘এখানে আকাশ নীল’ ইত্যাদি সিনেমা। ষাটের দশকে জনপ্রিয় জুটি ছিলেন তারা।
শাবানা-আলমগীর
১৯৭৩ সালে ‘দস্যুরানী’ ছবির মাধ্যমে প্রথম জুটি বেঁধে অভিনয় করেন শাবানা ও আলমগীর। স্বল্প সময়ে তারা বিপুল দর্শক-গ্রহণযোগ্যতা পান। শাবানা অভিনীত চলচ্চিত্রের সংখ্যা ২৯৯টি। এর মধ্যে ১৩০টি চলচ্চিত্রে শাবানার বিপরীতে নায়ক ছিলেন আলমগীর। এ জুটির উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে- ‘মধুমিতা’, ‘মনিহার’, ‘ঘরের বউ’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘অস্বীকার’, ‘ভাত দে’, ‘রাঙা ভাবী’, ‘অশান্তি’, ‘সত্য মিথ্যা’, ‘মরণের পরে’, ‘নিষ্পাপ’, ‘অতিথি’, ‘গরীবের বউ’ প্রভৃতি।
ফারুক-ববিতা
ঢাকাই ছবির দর্শক এবং সমালোচক-উভয় মহলের প্রিয় ছিলেন ফারুক-ববিতা জুটি। ১৯৭৩ সালে ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবিতে প্রথম একসঙ্গে অভিনয় করেন তারা। এরপর একে একে ‘আলোর মিছিল’, ‘লাঠিয়াল’, ‘নয়নমণি’, ‘সূর্য সংগ্রাম’, ‘প্রিয় বান্ধবী’, ‘কথা দিলাম’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ‘মিয়া ভাই’ এবং ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’ ইত্যাদি সিনেমায় অভিনয় করেন তারা।
নাঈম-শাবনাজ
১৯৯০ সালে পরিচালক এহতেশামের ‘চাঁদনী’ ছবির মাধ্যমে রুপালি পর্দায় অভিষেক ঘটে নাঈম-শাবনাজ জুটির। প্রথম ছবিতেই ব্যাপক সফলতা পান নাঈম-শাবনাজ। তাদের অনস্ক্রিন রসায়ন বেশ দর্শকপ্রিয়তা পায়। ফলে পরিচালকরাও তাদের নিয়ে একের পর এক ছবি নির্মাণ শুরু করেন।
২০টির মতো চলচ্চিত্রে একসঙ্গে অভিনয় করেন নাঈম-শাবনাজ। এ জুটির উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হলো- ‘জিদ’, ‘লাভ’, ‘চোখে চোখে’, ‘অনুতপ্ত’, ‘বিষের বাঁশি’, ‘সোনিয়া’, ‘টাকার অহঙ্কার’, ‘সাক্ষাৎ’ ও ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’ ইত্যাদি।
সালমান শাহ-শাবনূর
সালমান-শাবনূর জুটি ঢাকাই চলচ্চিত্রের আরেকটি দর্শকপ্রিয় জুটি। ১৯৯৪ সালে ‘তুমি আমার’ ছবির মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ ঘটে সালমান-শাবনূর জুটির। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করে এ জুটি। সালমানের ২৭টি ছবির মধ্যে ১৪টিতেই নায়িকা ছিলেন শাবনূর। ‘তুমি আমার’ সিনেমার পর সালমান-শাবনূর জুটি একে একে উপহার দেয়- ‘সুজন সখি’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘মহামিলন’, ‘বিচার হবে’, ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘জীবন সংসার’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘প্রেম পিয়াসী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আনন্দ অশ্রু’ ও ‘বুকের ভিতর আগুন’।
শাকিব-অপু
ঢাকাই ছবির জুটির ক্ষেত্রে সর্বশেষ সফল জুটি হলেন- শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। ২০০৬ সালে এফ আই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিতে প্রথম জুটিবদ্ধ হন তারা। ‘কোটি টাকার কাবিন’-এর সফলতার পর এফ আই মানিক এ জুটিকে নিয়ে একই বছর নির্মাণ করেন- ‘পিতার আসন’, ‘চাচ্চু’ ও ‘দাদীমা’। ‘কোটি টাকার কাবিন’ সহ সবই হিট। প্রায় এক দশক বড় পর্দায় জুটি ছিলেন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। একসঙ্গে মোট ৭২টি ছবিতে অভিনয় করেন তারা। এ জুটির শেষ সিনেমা ছিল ২০১৬ সালের ‘সম্রাট’।