বর্তমান নগরায়ণের যুগে শব্দদূষণ দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। ইউনাইটেড নেশন ইনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনইপি)-এর ২০২২ সালের এক রিপোর্টে রাজশাহীকে বিশ্বের চতুর্থ শব্দ দূষণকারী শহর হিসেবে দেখায়। যেখানে রাজশাহীতে শব্দের পরিমাণ দেখানো হয় ১০৩ ডেসিবেল। এই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহীর বরেন্দ্র পরিবেশ উন্নয়ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শহরের পাঁচটি জনবহুল স্থানে দিনের বেলায় শব্দের মান নির্ণয় করে।
এতে সর্বোচ্চ গড় শব্দ পাওয়া যায় নগরীর রেলগেটে ৯৬.৩০ ডেসিবেল এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৬.১০ ডেসিবেল নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ে। তালাইমারী মোড়, বিসিক মঠ পুকুর ও সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট এলাকায় শব্দের মান পাওয়া যায় যথাক্রমে ৮৮.৮০ ডেসিবেল, ৭৬.০০ ডেসিবেল এবং ৯০.৫০ ডেসিবেল।
প্রাপ্ত ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে শব্দ দূষণের মূল কারণ ও এর সম্ভাব্য প্রতিকারের বিষয়ে সংস্থাটি অনুসন্ধান করে। এতে দেখা যায়, প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যাটারিচালিত অটো এবং অটোরিকশার উপস্থিত ছিল। অধিকাংশ যানবাহন অযথা হর্ন বাজাতে থাকে। এগুলো মূলত টিটি হর্ন ব্যবহার করে। নগরীর তালাইমারী ও রেলগেট এলাকায় বাসগুলোকে অযথা হর্ন বাজাতে দেখা যায়।
প্রতিকারের বিষয়ে সংস্থাটি বলছে, অটোরিকশাগুলোতে ভেপু হর্ন বাধ্যতামূলক করা উচিত। যেন অন্য কোনো হর্ন ব্যবহার করতে না পারে। একই সঙ্গে অটোরিকশা আর রিকশাগুলো নির্দিষ্ট লেন ব্যবহার করলে এবং বাসগুলো যত্রতত্র না দাঁড়ালে অন্য গাড়িগুলোকে অহেতুক হর্ন দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। শহরের মধ্যে গতিসীমাও নির্দিষ্ট করলে এর পরোক্ষ প্রভাব শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের ওপর পড়বে। শব্দদূষণের প্রভাব শুধু মানুষের ওপর না, প্রতিটি পশু-পাখির ওপর পড়ে। আমের শহর রাজশাহীতে আম-জাম জাতীয় ফলের গাছ, নিম, শজিনা গাছ লাগানো যেতে পারে; যেগুলো বড় হলে শব্দ ও বায়ুদূষণ রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। শজিনা গাছ বায়ু থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে অক্সিজেন নির্গমনে কার্যকর গাছগুলোর মধ্যে অন্যতম। পরীক্ষায় নেতৃত্ব দেন প্রকৌশলী জাকির হোসেন খান। তাকে সহযোগিতা করেন ড. অলি আহমেদ, ওবায়দুল্লাহ, শামসুর রাহমান শরীফ, কলি আহমেদ।